‘কথা বলেননি মরিয়মের সঙ্গে, যেতে চাননা কারো কাছেই’
প্রকাশিত : ১৫:৩৬, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
অবশেষে অপহরণ ও লাশ উদ্ধার নাটকের অবসান। খুলনার আলোচিত নিখোঁজ রহিমা বেগমকে ২৮ দিন পর ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে তাকে পিবিআই’র কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রোববার সকাল সাড়ে দশটায় নগরীর সোনাডাঙ্গা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে হাজি মহসিন রোডের খুলনা পিবিআই অফিসে নেয়া হয় রহিমা বেগমকে।
তবে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে কিছুই বলেননি তিনি। ফিরে যেতে চাননা সন্তান ও স্বামীর কাছে। কথা বলেননি মেয়ে মরিয়মের সাথেও।
পিবিআই পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, “একজনকে অপহরণ করে নিয়ে গেলে এই জিনিসগুলো থাকার কথা নয়। তারপরও মামলার তদন্তে একদম প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা আছি। তবে আপাতত দৃষ্টিতে বিষয়টি অপহরণ নাও হতে পারে।”
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুসের বাড়ি থেকে রহিমাকে উদ্ধার করা হয়। এক সময় খুলনায় রহিমা বেগমের বাসায় ভাড়া থাকতেন কুদ্দুস। এ ঘটনায় কুদ্দুসের ছেলে, তার স্ত্রী ও ভাইয়ের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।
কেএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “তার দেবরের স্ত্রীসহ তিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। কি কারণে ওনাদের বাড়িতে গেলেন এবং কিভাবে আসলেন এটা জানার জন্য নিয়ে আসা।”
গেলো বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের ফুলপুরে মায়ের লাশ পাওয়া গেছে বলে ফেইসবুক পোস্ট দেন মেয়ে মরিয়ম মান্নান। এরপর রহিমার চার মেয়ে ১৩ দিন আগে উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্দি একটি লাশ রহিমা বেগমের বলে নিশ্চিত করে।
রহিমার মেয়ে মরিয়ম মান্নান বলেছিলেন, “মায়ের চোখ, কপাল, হাত, মায়ের শরীর চিনতে কোনো প্রমাণ লাগে না। আমি এখনও বলছি উনি আমার মা।”
এদিকে, মাকে উদ্ধারের পর ছেলে মিরাজ বলছেন, তার পরিবারের কেউ যদি নাটকীয় কিছু করে থাকেন তারও বিচার হোক।
রহিমা বেগমের ছেলে মিরাজ আল সাবিদ বলেন, “আমাদের মধ্য থেকে যদি মায়ের আত্মগোপনের সাথে আমি স্বয়ং জড়িত ছিলাম বা অন্য কেউ জড়িত ছিল এ রকম যদি প্রমাণিত হয় অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় আনা হোক।”
অপরদিকে অপহরণ মামলায় আটক ৬ আসামির স্বজনরা বলছেন, তারা ষড়যন্ত্রের শিকার। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মরিয়ম মান্নানসহ জড়িতদের বিচারও দাবি করেন তারা।
মামলায় আসামিদের স্বজনরা বলেন, “এতোদিন যে আমার বাবা জেল খাটলেন তার কারণ কী? আজকে তো প্রমাণ হয়ে গেল যে আমার বাবা কিছুই করেননি। এই যে মানহানী তার বিচার চাই। যে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে তাদের প্রত্যাহার চাই।”
গত ২৭ আগস্ট খুলনার মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে নিখোঁজ হন ৫৫ বছর বয়সী রহিমা বেগম। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।
এএইচ
আরও পড়ুন