ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

আড়াই হাজার সংসার টিকালো উইমেন্স সাপোর্ট সেন্টার

মীর মোঃ শাহীন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে

প্রকাশিত : ০৯:৪৩, ৩ অক্টোবর ২০২২

পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তি, ভেঙ্গে যাওয়া সংসার জোড়া লাগানো, সহিংতার শিকার হওয়া নারী, শিশুদের সুরক্ষা দেওয়া এবং নারীদের সুরক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে উইমেন্স সাপোর্ট সেন্টার। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেই প্রথম এর কার্যক্রম চালু হওয়ায় আশার আলো দেখছে অসহায় নারী ও শিশুরা। 

এ কার্যক্রম চালু হওয়ার পর থেকে পারিবারিক কলহ, স্বামী কৃর্তক দৈহিক, মানুষিক নির্যাতন, ইভটিজিংসহ নানা সমস্যা সমাধানে আদালতের দারস্থ হওয়ার আগেই হচ্ছে ভালো সমাধান। এতে জেলায় নারী নির্যাতন সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা তুলনামূলক কমে এসেছে। 

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলা কমিয়ে আনার জন্য ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় দেশে প্রথমবারের মত উইমেন্স সাপোর্ট সেন্টারের কার্যক্রম শুরু হয়। একজন ইন্সপেক্টর ও দুজন কনস্টেবল নিয়ে এর কার্যক্রম শুরু হয় যা বর্তমানে চলমান রয়েছে। 

পারিবারিক কলহ, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং ছাড়াও নারীদের নানা সমস্যা যেগুলো মামলায় জড়ায়নি সেসব বিষয়ের অভিযোগগুলোকে রেজিষ্ট্রারভূক্ত করার পর জিডি করে ভুক্তভোগীদের দেয়া হয় প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা ও পরামর্শ।

এ বিষয়ে জেলা জজ কোটের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: নাসির মিয়া বলেন, উইমেন্স সাপোর্ট সেন্টারে কার্যক্রমের আইনগত বৈধতা না থাকলেও পারিবারিকভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এটির গুরুত্ব অপরিসীম। আগে প্রতিবছর জেলায় ২ হাজার নারী নির্যাতনের মামলা হতো কিন্তু এখন তা আগের তুলনায় অনেকটাই কমে গেছে। নারী নির্যাতন রোধের পাশাপাশি ভেঙ্গে যাওয়া পরিবারের ও বৃদ্ধ মা-বাবার ভরণ পোষণের দায়িত্বের বিষয়েও এই ডেস্ক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, উইমেন্স সার্পোট সেন্টারের মাধ্যমে তারা তাদের ভেঙ্গে যাওয়া সংসারে আবারও শান্তি ফিরে পেয়েছেন। এছাড়াও যেসব পরিবারের মামলা-মোকাদ্দামায় জড়ানোর সক্ষমতা নেই তাদের জন্য উইমেন্স সার্পোট সেন্টার সমাধানের জন্য প্রধান মাধ্যম। 

উইমেন্স সাপোর্ট সেন্টার ডেক্সের পুলিশ কর্মকর্তা কামরুন নাহার বলেন, ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৩৮৩টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্যে ৩ হাজার ৩৫০টি মামলা-মোকাদ্দমা ছাড়াই সমাধান হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা আড়াই হাজার সংসারকে বিচ্ছেদের হাত থেকে টিকাতে পেরেছি। 

প্রতিদিনই এই ডেস্কে ৩-৪ টি পরিবার অভিযোগ নিয়ে আসে পুলিশিং সেবা নিতে। এর ফলে মামলা মোকাদ্দমা আগের তুলনায় অনেকটাই কমে এসেছে। 

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার মো: আনিসুর রহমান বলেন, উইমেন্স সাপোর্ট সেন্টার ডেস্কের মাধ্যমে শিশু নির্যাতন, যৌতুক ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার সমাধানে কাজ করছে। এ সুবিধার ফলে পারিবারিক কলহসহ নানা বিষয়ে আদালতের দারস্থ হওয়ার আগেই সেগুলোর সঠিক সমাধান হচ্ছে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি