বন্ধুকে হত্যার দায়ে ৩ বন্ধুর যাবজ্জীবন

পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় বন্ধু মনিরুল খাঁ (২৭) নামের এক ভ্যানচালককে হত্যার দায়ে এক ইউপি সদস্যসহ তিন বন্ধুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ১১ বছর পর সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে পাবনার বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আহসান তারেক এ রায় ঘোষণা করেন। 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক, আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট তৌফিক ইমাম খান ও সৈয়দ আলী রেজা পারভেজ।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ফরিদপুর উপজেলার দিঘুলিয়া গ্রামের লিয়াকত হোসেনের ছেলে শাহীন আহমেদ, ছোট গোলকাটা গ্রামের মুন্নাফের ছেলে মো. আজম এবং কেনাই পশ্চিমপাড়া গ্রামের জয়নুল সরদারের ছেলে মুকুল সরদার। তাদের মধ্যে মুকুল সরদার পুংগুলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।

রায়ের সময়ে আসামিরা সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়। 

মামলার এজাহার ও চার্জশিট সূত্রে জানা যায়, মনিরুল ২০১৩ সালের ২১ জুন বিকাল থেকে নিখোঁজ হোন, পরদিন ২২ জুন বিকালে কেনাই মাঠের ফসলি জমিতে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ফরিদপুর থানায় নিহতের বাবা ইসাহাক আলী খাঁ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। 

মামলার তদন্তে উঠে আসে মনিরুল ও আসামিরা পরস্পর বন্ধু। কেনাই মাঠে তাদের মধ্যে জুয়া খেলার পর মনিরুল জিতে যায়। সেই জেতা টাকা নিয়ে অপর তিনজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে আসামিরা মনিরুলকে গলা টিপে হত্যা করে লাশ ফসলের মাঠে ফেলে দেয়। 

ঘটনায় তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। ১২ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও দীর্ঘ তদন্তের পর ৩ অক্টোবর সোমবার এই রায় ঘোষণা করা হলো।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করেছে। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আমরা রায়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট।

তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, মামলার অভিযোগে নাম না থাকলেও পরে চার্জশিটে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে মক্কেলরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। উচ্চ আদালতে আপিল করবো, আশা করি সেখানে আমরা ন্যায়বিচার পাবো।

এএইচ