শরণার্থী কার্যালয়ে স্ব-পরিবারে আত্মহত্যার চেষ্টা রোহিঙ্গা যুবকের
প্রকাশিত : ০৮:৫৮, ২০ অক্টোবর ২০২২
কক্সবাজারে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর কার্যালয়ের সামনে শুয়ে এক রোহিঙ্গা যুবক আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। এসময় তার সঙ্গে মা-স্ত্রী ও সন্তানসহ পরিবারের ৫ সদস্য ছিল।
পরে ইউএনএইচসিআর-এর কর্মকর্তা, নিরাপত্তারক্ষী, গণমাধ্যম কর্মী ও টহল পুলিশ আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ওই যুবককে বুঝিয়ে-শুনিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফেরত পাঠায়।
বুধবার রাত ৮টার দিকে কক্সবাজার শহরের মোটেল রোডে ইউএনএইচসিআর কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ওই যুবক উখিয়ার কুতুপালং নিবন্ধিত শরণার্থী শিবিরের ই/ব্লকের ৪০ নাম্বার শেডের বাসিন্দা এহসানুল হকের ছেলে। সঙ্গে ছিল তার স্ত্রী, সন্তান, ভাই ও মা ফাতেমা বেগম।
পারিবারিক বিরোধের বঞ্চনার বিচার চাইতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইসসিআর) কক্সবাজার সাব অফিসে আসেন রোহিঙ্গা যুবক আবুল ওসমান। তখন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে ওই যুবক সড়কে শুয়ে পড়েন। স্ব-পরিবারের আত্মহত্যার হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী রোহিঙ্গা আবুল ওসমান বলেন, পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে ক্যাম্প সিআইসি ও পুলিশ হয়রানি করছে নিয়মিত। পাশাপাশি রেশন দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে যে সকল সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তার কিছুই দেয়া হচ্ছে না। নির্যাতনের বিচার চাইতে ইউএনএইসসিআর’র সাব-অফিসে আসি। কর্মকর্তারা বার বার আশ্বস্ত করেন। কিন্তু কোন সমাধান দেয় না।
এভাবে তাদের অবহেলার কারণে প্রতিদিন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে জানান রোহিঙ্গা যুবক।
এ যুবক আরও জানান, নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে নিরাপত্তা দেয়ার কথা থাকলেও তার কোন কিছুই করছে না। বার বার অভিযোগ করার পরও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এখন স্ব-পরিবারে আত্মহত্যা করা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নাই।
আত্মহত্যা চেষ্টাকারী যুবকের মা ফাতেমা বেগম বলেন, “ওসমানের বাবা আরেকটি বিয়ে করেছেন। ওই নারী লোকজন নিয়ে আমার সন্তানদের হত্যার উদ্দেশ্যে একাধিক বার হামলা করে। এ নিয়ে বার বার অভিযোগ দেয়ার পরও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এখন পুরোপরিবার শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছি। ইউএনএইসসিআর অফিসেও কয়েক দফা বলার পরও সমাধান হচ্ছে না। এখন কোথায় যাবো।”
ইউএনএইসসিআর কার্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষীদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিন বলেন, সিনিয়র স্যারদের সঙ্গে কথা বলে তারা বের হয়। এক পর্যায়ে ওই যুবক সড়কে শুয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পর আমরা তাকে বুঝিয়ে একটি ইজিবাইকে তুলে দিয়েছি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইউএনএইসসিআর কক্সবাজার কার্যালয়ের লিয়াজো অফিসার ইখতিয়ার উদ্দিন বায়েজীদ বলেন, নিবন্ধিত রোহিঙ্গা পরিবার বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। তাদের সঙ্গে কথার পর বেরিয়ে রোহিঙ্গা যুবক অফিসের সামনের সড়কে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এএইচ
আরও পড়ুন