প্রেমের টানে নোয়াখালীতে মিশরী ডালিয়া
প্রকাশিত : ১৯:৫০, ২১ অক্টোবর ২০২২
মিশরী বধূ ডালিয়াকে নিয়ে নোয়াখালীর নিজ বাড়িতে গোলাম সারোয়ার বাবু
প্রেমের টানে এবার সুদূর পিরামিডের দেশ থেকে বাংলাদেশের নোয়াখালীতে পাড়ি জমালেন মিশরী কন্যা ডালিয়া দিয়াত দ্বীপ। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হয়ে নোয়াখালীতে পৌঁছান তিনি।
জানা গেছে, চাকরির সুবাদে ২০১২ সালে মিশরে পাড়ি জমান নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড গোবিন্দপুর গ্রামের গোলাম মাওলার ছেলে গোলাম সারোয়ার বাবু। পাশাপাশি বাসায় অবস্থায় করায় ২০১৭ সালে দুজনের মধ্যে পরিচয় হয় এবং ঘটে যায় মন দেয়া-নেয়াও। তা থেকে মধুর লগনে গড়ায় তাদের সম্পর্ক। পরিবারের মতে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হয় এ জুটি।
বৃহস্পতিবার রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হয়ে নোয়াখালীতে নিজ বাড়িতে আসেন গোলাম সারোয়ার বাবু। সঙ্গে করে নিয়ে আসেন মিশরী স্ত্রী ডালিয়া দিয়াত দ্বীপকে।
মিশরী বধূ নিয়ে বাবু বাড়িতে এসেছেন- এমন খবরে শুক্রবার সকাল থেকে তার বাড়িতে ভিড় করতে থাকে এলাকার লোকজন। ডালিয়াকে এক নজর দেখতে ভিড় করেন বাবুর বাড়িতে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের বড় ছেলে হওয়ায় জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে বাড়ির এক চাচার সহযোগীতায় ২০১২ সালে মিশরে যান গোলাম সারোয়ার বাবু। পরবর্তীতে মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া এলাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন বাবু। চাকরিকালীন ডালিয়াদের পাশের বাসায় থাকতেন বাবু। পাশাপাশি বাসায় থাকার সুবাদে প্রথমে ডালিয়ার ভাইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তার।
সেই সূত্র ধরে ডালিয়াদের বাসায় আসা যাওয়া ছিলো বাবুর। আসা যাওয়ার মধ্যে ডালিয়ার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। ২০১৮ সালে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি ডালিয়ার পরিবারকে জানালে প্রথমে তারা রাজি ছিলেন না। রাজি ছিলো না বাবুর পরিবারও। কিন্তু বাবু-ডালিয়ার অথৈই প্রেমের কাছে হার মানতে রাজি হন দুই পরিবারই।
২০১৯ সালে তাদের মধ্যে আংটি বদল ও ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি তাদের বিয়ে হয়। গত বছর তাদের কোলজুড়ে এক সন্তান এলেও শিশুটি পরে মারা যায়।
বাবু বলেন, ডালিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক ও বিয়ের পর এই প্রথম দেশে আসা তাদের। বর্তমানে সুখে-শান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন তারা। বিদেশী পুত্রবধূকে কাছে পেয়ে খুশি শ্বশুর-শাশুড়ি। পরিবারের সদস্যরাও আনন্দিত বলেও জানান তিনি।
কিছুটা বাংলা বলতে পারা ডালিয়া বলেন, বাংলাদেশি খাবার এবং পরিবেশ তার ভালো লাগে। এটা তার স্বামীর দেশ। এ দেশকে তিনি ভালোবাসেন। আগামী দুই মাস এখানে থেকে আবার মিশর যাবেন তারা। এরপর থেকে সুযোগ পেলেই দেশে আসবেন বলেও জানান এই মিশরী বধূ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুজ্জামান মিরন বলেন, দেশে আসার পর থেকে বাবুদের বাড়িতে অনেক ধরনের লোকের ভিড় লেগে আছে। এতে করে যেন কোনও অনাকাঙ্খিত ঘটনা না ঘটে, তার জন্য আমরা পরিবারটির দেখাশোনা করছি। সবসময় তাদের সাথে যোগাযোগও রাখা হচ্ছে।
এসময় তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের সবার দায়িত্ব বলে পরিবারটির পাশে থাকতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন এই ইউপি সদস্য।
এনএস//
আরও পড়ুন