ঢাকা, শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

খুলনায় গলদা চিংড়ির গুণগতমান উন্নয়নে সেমিনার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:২২, ২৮ নভেম্বর ২০২২ | আপডেট: ১৮:৪০, ২৮ নভেম্বর ২০২২

বাংলাদেশের গলদা চিংড়ি চাষে পরিবর্তিত জলবায়ু সহনশীল ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার এবং গলদা চিংড়ির গুণগতমান উন্নয়নের লক্ষ্যে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) খুলনার হোটেল সিটি ইন এ এই সেমিনার হয়। কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়, ডেনমার্ক, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক যৌথভাবে ডানিডা’র অর্থায়নে পরিচালিত ECOPRAWN প্রকল্পের উদ্বোধন হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবুল কাসেম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অত্র প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক ও কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. ম্যাক্স নেলসন। 

অন্যান্য অতিথিবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিন, পোস্টগ্রাজুয়েট স্টাডিজ, পবিপ্রবি ও মৎস অধিদপ্তর, খুলনা’র উপপরিচালক ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকবৃন্দ।

উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর বদিউজ্জামান ও সঞ্চালনায় থাকেন প্রফেসর ড. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকার। উক্ত অনুষ্ঠানটি গলদা চিংড়ী চাষ, বিপণন, রপ্তানি ও নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মতবিনিময় উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত হয়। 

খুলনা বিভাগের বিভিন্ন উপজেলার গলদা চিংড়ি চাষী ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীগণ উপস্থিত থেকে, গলদা চিংড়ি চাষ, প্রক্রিয়াকরণ, প্রমিতকরণ ও বিপণনের সমস্যা ও সম্ভাবনার তথ্য তুলে ধরেন।

প্রকল্পটির গবেষণা কার্যক্রম মোট ৪টি গবেষণা দল কর্তৃক পরিচালিত হবে। প্রথম দুটি দল পরিবেশবান্ধব ও জলবায়ুসহনশীল প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। ইমটা (ইন্টিগ্রেটেড মাল্টি-ট্রফিক অ্যাকোয়াকালচার) একটি বিশেষ ধরণের সমন্বিত অ্যাকোয়াকালচার পদ্ধতি। এখানে মাছ, চিংড়ি, মোলাক্স ও জলজ আগাছার একত্রে চাষ করা হয়। ইমটা সিস্টেমে জৈব বর্জ্যগুলো মোলাক্স বা শামুক দ্বারা খাদ্য হিসেবে গৃহীত হয় এবং অজৈব বর্জ্যগুলো জলজ উদ্ভিদ দ্বারা গৃহীত হয়। এতে করে পুকুর বা চিংড়ি ঘেরের পরিবেশ স্বাভাবিক থাকে, পানির গুণাগুণ ভালো থাকে, একসাথে মাছ, মোলাক্স এবং জলজ আগাছা উৎপাদিত হয়।

প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে চিংড়িশিল্পের রোগ জীবাণু প্রশমন এবং টেকসই বৃদ্ধি নিশ্চিত করা হয়। গবেষণা পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে প্রোবায়োটিক বেশিষ্ট্য সম্পূর্ণ ব্যাকটেরিয়া সনাক্ত ও আলাদা করা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার কার্যকারিতা যাচাই করা, এবং গ্রামীণ চিংড়ি চাষিদের ব্যাবহার উপযোগী প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন করা।

ফেজ থেরাপি (রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া খাদক) প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিওফেজগুলি সনাক্ত ও চিহ্নিত করা, জিনোম সিকোয়েন্স করা, জিনোমগুলো একত্রিত করা, কার্যকরী জিনোমগুলো সঙ্গায়িত ও তুলনা করা, হোস্টের কার্যকারিতা নির্ধারণ করা, ফেজ ককটেল তৈরি করা, ল্যাব ও গবেষণা মাঠে স্বল্প পরিসরে ফেজ ককটেলগুলোর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা এবং গলদা চিংড়ির ঘেরে প্রয়োগ এর মাধ্যমে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া র্নিমূল করা।

উক্ত গবেষণা কার্যক্রম প্রফেসর ড. মাহফুজুল হক ও প্রফেসর ড. মোঃ লোকমান আলীর নেতৃত্বে প্রফেসর ড. মোঃ ইসমাইল হোসেন, ড. মোঃ সাজেদুল হক ও ড. মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাকের সহযোগিতায় ৪জন পিএইচডি গবেষক কাজ করবেন।

অপর দুটি দল উন্নত প্রযুক্তির অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা যাচাই, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাজারের চাহিদা যাচাই, আন্তর্জাতিক বাজারের প্রবেশের প্রতিবন্ধকতা নিরুপণ এবং বাজারের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। খামার পর্যায়ে উন্নত প্রযুক্তির অর্থনৈতিক প্রভাব ও উৎপাদিত চিংড়ি ভোক্তার গ্রহণযোগ্যতা ও এই শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং এর টেকসই প্রভাবের বিষয়ে এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। 

প্রফেসর বদিউজ্জামান ও প্রফেসর ড. আখতারুজ্জামান খানের নেতৃত্বে প্রফেসর ড. মোঃ তকিবুর রহমান, প্রফেসর ড. ইমরানুল ইসলাম ও প্রফেসর ড. আফ্জাল হোসেনের সহযোগিতায় ৪জন পিএইচডি গবেষক গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করবেন। প্রকল্পটি গলদা চিংড়ীর চাষ ও বাজার সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি