ঢাকা, শুক্রবার   ০৭ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ঘাতকের দেয়া তথ্যে নদীর তলে পুঁতে রাখা শিশুর মরদেহ উদ্ধার

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:৪৮, ২ ডিসেম্বর ২০২২ | আপডেট: ০৯:৫১, ২ ডিসেম্বর ২০২২

শিশু ইব্রাহীম

শিশু ইব্রাহীম

Ekushey Television Ltd.

নওগাঁর আত্রাইয়ে নিখোঁজের ২১ দিন পর ৫ বছরের শিশু ইব্রাহীমের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় আটক ঘাতক বুলবুলের তথ্য মতে নদীর তলদেশে কাঁদায় পুতে রাখা অবস্থায় লাশ পাওয়া যায়। 

বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে নওগাঁর পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বৃহস্পতিবার ভোরে এলাকার লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে গ্রামের পাশে আত্রাই নদীর তলদেশ থেকে শিশু ইব্রাহীমের অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে।  

দোকানের বেলুন ফাঁটানোর অপরাধে শিশু ইব্রাহিমকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ দুই দফায় গুম করে রাখা হয়। পরে নিহতের পিতার কাছে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। 

নিহত ইব্রাহিম গ্রামের একটি মাদ্রাসার ছাত্র ও ওই গ্রামের কৃষক হযরত আলীর ছেলে। 

এই ঘটনায় একই গ্রামের আব্দুল জলিল সোনরের ছেলে বুলবুল সোনার (৩০)কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার যুবক শিশু ইব্রাহিমকে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোঃ রাশিদুল হক নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের নানাদিক তুলে ধরে বলেন, ইব্রাহীম গত ১০ নভেম্বর দোকান থেকে জিনিস কেনার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারর লোকজন। পরদিন ১১ নভেম্বর এই ঘটনায় আত্রাই থানায় একটি জিডি দায়ের করে তার স্বজনরা। জিডি’র সূত্র ধরে নিখোঁজ শিশু উদ্ধারের তদন্তে মাঠে নামে পুলিশ। 

এরই মধ্যে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি নতুন সিম ও মোবাইল কিনে বাড়ির পাশে বাবুর চা দোকানের চুলার মধ্যে রেখে আসতে শিশুর বাবার শয়ন ঘরে একটি চিঠি দেয় ঘাতক। এরপর গত ২৬ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে মোবাইলে মুক্তিপণ চায় ঘাতক।

ঘাতক বুলবুল সোনারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ

একপর্যায়ে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ও স্থানীয় সোর্সের মাধ্যমে বুলবুলকে সনাক্ত করে ২৭ নভেম্বর তাকে আটক করে। ওই দিনই শিশুর বাবা হযরত আলী বাদী হয়ে বুলবুলকে আসামি করে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ বুলবুলকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোর্পদ করলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মুঞ্জুর করে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত বুলবুল সোনারের জবানবন্দীর উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ সুপার জানান,  শিশুটিকে হত্যা করে প্রথমে ছাইয়ের স্তূপে রাখা হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে দুর্গন্ধ বের হতে লাগলে ১৮ নভেম্বর রাতে শিশুটির মরদেহ বালতিতে ভরে পাশের আত্রাই নদীর তলদেশে কাঁদার মধ্যে পুতে রাখে। লাশ যেন ভেসে না উঠে তার জন্য সিমেন্টের স্লাব দিয়ে মরদেহ চাপা দেয়।

জানা যায়, গ্রেপ্তার বুলবুল স্থানীয় একটি মাদ্রাসার খণ্ডকালীন শিক্ষক এবং পাশাপাশি গ্রামে একটি মুদি ও চা-দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন। ইব্রাহীম ওই দিন তার দোকানে এসে কয়েকটি বেলুন ফাটিয়ে ক্ষতি করে। এতে রাগান্বিত হয়ে শিশুটির গলা টিপে ধরলে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে, রিমান্ডে থাকা আসামি বুলবুল পুলিশকে বলেছেন যে, অনেক ঋণ থাকার কারণে টাকার প্রয়োজনে এই কাজ করেছেন।

পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য বুলবুলকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হবে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি