ঢাকা, রবিবার   ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

কাজ শেষের আগেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধে ফাটল-ধস

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:৪৫, ১০ জানুয়ারি ২০২৩

ষাটের দশকে বাগেরহাট সদর উপজেলার ভৈরব নদ পাড়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেই বাঁধটি নিচু থাকায় গেল কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও বর্ষা মওসুমে অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছিলেন স্থানীয়রা। সেই বাঁধটি উঁচু করে নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ায় খুশি হয়েছিলেন স্থানীয়রা। এখন তারাই নানা অনিয়মের অভিযোগ করে বাঁধটির স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধের সংস্কার ও উঁচু করার কাজে বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাঁধের জন্য জোরপূর্বক স্থানীয়দের বসতবাড়ি ও জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া, বাঁধের গোড়া এবং নদী থেকে বালুচর কেটে মাটি নেওয়ার অভিযোগ তাদের। 

সরেজমিনে স্থানীয়দের এসব অভিযোগের সত্যতা মেলার পাশাপাশি নির্মাণ কাজ শেষের আগেই বাঁধের কয়েকটি অংশে ফাটল ও ধসে যাওয়ার চিত্র দেখা গেছে।

পাউবোর তথ্য বলছে, বাগেরহাট শহরের বিপরীতে ভৈরব নদ পাড়ের ভাতছালা-মুনিগঞ্জ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এই বাঁধের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০ লাখ টাকা। এর আওতায় পূর্বের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট উঁচু করা হবে বাঁধটি। জরুরি ভিত্তিতে নাজিরপুর উপ-প্রকল্পের অধীন ডিপিএম বা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এই বাঁধ তৈরির কাজ পায় ঠিকাদার শেখ শহিদুল ইসলাম। 

চলতি জানুয়ারি মাসেই শেষ হওয়ার কথা তিন মাস মেয়াদী এই প্রকল্পের কাজ।

স্থানীয়দের অভিযোগ সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, বাঁধে কোথাও বালি দেওয়া হয়নি। আর কাজ চলমান আছে, বাঁধের ঢালটা আমরা পরে করি। এখনও ফিনিসিংয়ের কাজ করা হয়নি, সুতরাং এখনই ধসে যাচ্ছে এ কথা বলাটা সমুচিত হবে না। 

তবে বাঁধ নির্মাণের জন্য মাটি কিনে নেওয়ার কোন বরাদ্দ নেই। আর নির্মাণ কাজের ৫০ ভাগের বেশি শেষ হয়েছে। বাঁধের পুরো কাজ শেষ করতে প্রকল্পের সময় কিছুটা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে পাউবো।

চরগ্রাম গ্রামের শাহ জাহান শেখ বলেন, “বাঁধের একদম গোড়া থেকে মাটি কাটা হয়েছে। এই বাঁধ টিকবে কি করে? নদীর চরের বালি দিয়ে বাঁধ করলে, কোন দিন থাকবে না। বালি, কাঁদা মাটি দিয়ে বাঁইধে গেছে। পানি চাপ দিলি তো বাঁধ ধসে নদীতে চলে যাবে। এগুলো দেখার কেউ নেই।”

আবুল কালাম গাজী বলেন, “বালি দেওয়ায় দুই তিন জায়গায় ডেবে গেছে। বড় বড় গর্ত করে মাটি তোলায় অনেক জায়গায় ফাটল ধরছে। একটু বৃষ্টি হলে বাঁধও ধইসে যাবে।”

বাঁধের একদম গোড়া থেকে মাটি কাটা উচিৎ নয় বলে জানান পাউবোর এক কর্মকর্তা। আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রজি না হলেও তিনি বলেন, “বালি দিয়ে বাঁধ বানানো হচ্ছে, এটা সঠিক নয়। বাঁধের পাশে বালি থাকেনা, সে ক্ষেত্রে মাটি দেওয়া হচ্ছে। আর কাজ শেষে দুই পাশে আমরা ঘাস লাগাবো। তখন আর বাঁধ ধুয়ে যাবে না।”

বাঁধ নির্মাণের ঠিকাদার শেখ শহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, “২২ বছর পর এই বাঁধের সংস্কার হচ্ছে। এটা ইমারজেন্সি কাজ। এখানে মাটি কিনে নেওয়ার বরাদ্দ নেই।”

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি