খাদ্য গুদামে গমের বদলে বালির বস্তা, তদন্ত কমিটি গঠন
প্রকাশিত : ০৯:১৩, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
চুয়াডাঙ্গায় সদর উপজেলা খাদ্য গুদামের পরিবহন ঠিকাদারের গাড়িতে গম খালাসের সময় গমের বদলে ২৮টি বালি ভর্তি বস্তা ও ৬টি বড় ধরনের পাথর পাওয়া গেছে। এর রহস্য উদঘাটনের জন্য ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে ট্রাকের চালকসহ ১৪ জনকে আটক করে রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
চুয়াডাঙ্গায় সদর উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, গত ১ ফেব্রুয়ারি বিদেশ থেকে আমদানী করা গমের চালান চুয়াডাঙ্গা খাদ্য গুদামে আসতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে খুলনা ৪ নম্বর ঘাট থেকে খাদ্য পরিবহন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সরকার এন্টারপ্রাইজ, জোনাকী পরিবহন ও সানরাইজ জুট ট্রেডার্সের ৬টি ট্রাকে সাড়ে ১৬ মেট্রিক টন করে প্রায় ১০০ মেট্রিক টন গমের চালান আসে।
তিনি জানান, গম খালাসের সময়, ট্রাকগুলো থেকে গমের বস্তার পরিবর্তে ২৮টি বালি ভর্তি বস্তা ও ৬টি বড় ধরনের পাথর পাওয়া যায়। জোনাকী পরিবহনের চট্টগ্রাম মেট্রো ট-১১-৭৮৯৪ নম্বর ট্রাক থেকে ৭টি ও একই প্রতিষ্ঠানের খুলনা মেট্রো ট-১১-২২২৯ নম্বর ট্রাক থেকে ৬টি বালি ভর্তি বস্তা, সরকার এন্টারপ্রাইজের খুলনা মেট্রো ট-১১-০৩৬৩ নম্বর ট্রাক থেকে ৪টি ও একই প্রতিষ্ঠানের খুলনা মেট্রো ট-১১-০৭১৪ নম্বর ট্রাক থেকে ৫টি বালি ভর্তি বস্তা, সানরাইজ জুট ট্রেডার্সের খুলনা মেট্রো ট-১১-০৬৯৬ নম্বর ট্রাক থেকে ৫টি বালির বস্তা ও একই প্রতিষ্ঠানের ঢাকা মেট্রো ট-১৪-৬১৭৭ নম্বর ট্রাকে ৬টি বড় ধরনের পাথর পাওয়া যায়।
এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ট্রাকের চালকসহ ১৪ জনকে আটক করে রাখা হয়েছে।
এরা হলেন খুলনার বয়রা এলাকার বজলুর ছেলে ট্রাক চালক রাব্বি, বাগেরহাটের মোংলার মজিদের ছেলে ট্রাক চালক রবিউল, খুলনা কাস্টমস্ এলাকার মজিবর শেখের ছেলে হেলাল শেখ, খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার ট্রাক চালক সাইফুল, খুলনার জোড়াগেট এলাকার আক্কাসের ছেলে ট্রাক চালক আসাদ ও একই এলাকার সিদ্দিকের ছেলে ট্রাক চালক নান্নু।
তবে সচেতন মহলের বক্তব্য, এমন ঘটনা আজ ধরা পড়লেও বিগত দিনে এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এটাই এ ধরনের প্রথম ঘটনা।
খুলনা মেট্রো ট-১১-০৬৯৬ ট্রাকের চালক আসাদ জানান, খুলনার ৪ নম্বর ঘাটে ট্রাকে গম লোডের সময় চাকায় দিতে বালির বস্তা লাগে, তাই আমরা বালির বস্তা গাড়িতেই রেখেছিলাম।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কেএম শহিদুল হক বলেন, এদিন ভোর রাতে ৬টি ট্রাক আমদানীকার গম নিয়ে খুলনার রূপসা ৪ নম্বর ঘাট থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা খাদ্য গুদামে অসে। সকাল ৯টায় ট্রাক থেকে গম খালাস করার সময় গমের সঙ্গে বের হতে থাকে বালির বস্তা ও পাথর।
এ ঘটনা পর চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আলমডাঙ্গা উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হামিদকে প্রধান করে সদর উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ও কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক নাসরিন বানুকে নিয়ে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা শহিদুল হক।
এএইচ
আরও পড়ুন