পবিত্র কুরআন ছুঁয়ে এমপির প্রতি আনুগত্যের শপথ জনপ্রতিনিধিদের
প্রকাশিত : ১৬:২৭, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
নিজের পক্ষে থাকতে জনপ্রতিনিধিদের কোরআন শরীফে হাত রেখে শপথ করালেন রাজশাহী-১ এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। শনিবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের নিজের কার্যালয়ে ওমর ফারুক চৌধুরী তার নির্বাচনী এলাকার ১২ জন দলীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের কোরআন শরীফ ছুয়ে আনুগত্যের শপথ করান। যার ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে অফিসে পাঠানো হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী তার নিজের চেয়ারে বসে থেকে মোবাইলে ভিডিও করছেন। আর এক এক করে জনপ্রতিনিধিরা এসে এমপির সামনে টেবিলে রাখা কোরআন শরীফে হাত রেখে শপথ করছেন। কোরআন শরীফে হাত রেখে বলতে শোনা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ, নৌকা ও স্থানীয় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরোধীতা বা তাদের সঙ্গে বেইমানি করবো না।
পবিত্র কোরআন শরীফে হাত রেখে সাংসদ ফারুক চৌধুরীর প্রতি আনুগত্যের শপথ করার মধ্যে রয়েছেন, গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র ওয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস, মাটিকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেল রানা, দেওপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল, গোদাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা, মোহনপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খায়রুল ইসলামসহ তানোর ও গোদাগাড়ীর বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়র। তাদের শপথ গ্রহনের পুরো ভিডিও করেন তানোর উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না।
এমপির প্রতি অনুগত থাকতে পবিত্র কোরআন শরীফে হাত রেখে শপথ করার বিষয়টি স্বীকার করে গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নৌকার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে এমপি তাদের শপথ করিয়েছেন। সেখানে গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলার আমরা ১২ জন জনপ্রতিনিধি ছিলাম। সবাই শপথ নিয়েছি। কারণ এখন এমপির পক্ষে থাকলেও ভোটের আগে অনেকেই সরে দাঁড়ায়। তাদের শপথ করাতে বাধ্য করা হয়নি
বলেও দাবি করেন এই জনপ্রতিনিধি।
গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র ও গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আয়েজ উদ্দিন বলেন, আমরা সংসদ সদস্যের প্রতি আনুগত্য থাকার শপথ নিয়েছি। এসময় অনেকেই ছিল; সবাই কোরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ গ্রহণ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইউপি চেয়ারম্যান জানান, দুইদিন আগে গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলার পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের ডেকে পাঠান এমপি। শনিবার সন্ধ্যা সংসদ ভবনের নিজের চেম্বারে সবাইকে নিয়ে যান। সেখানে কোরআন শরীফে হাত রেখে এক এক করে সবাইকে শপথ করার। প্রথমে তার অনুগতরা শপথ করেন। ফলে বাধ্য হয়ে অন্যদের শপথ করতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীকে ফোন ও হোয়ার্টঅ্যাসে একাধিকবার ফোন দিয়েও তিনি রিসিভ করেননি। আর এ নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার।
এদিকে, নিজের পক্ষে রাখতে জনপ্রতিনিধিদের কোরআন শরীফে হাত রেখে শপথ করানোর এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর ভিডিও প্রকাশ হলে রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে।
কেআই//
আরও পড়ুন