ঢাকা, শুক্রবার   ১৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ভাষার টানে নোম্যান্সল্যান্ডে দুই বাংলার মিলন মেলা

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৪:৪৮, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হলো দুই বাংলার হাজার হাজার ভাষাপ্রেমীদের মিলন মেলা। মানুষের ঢল থামাতে দু’দেশে বিএসএফ এবং বিজিবি বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে নোম্যান্সল্যান্ডে নির্মিত অস্থায়ী শহিদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন তারা।

কাঁটাতারের বেড়া ভুলে মঙ্গলবার সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে বেনাপোল চেকপোস্ট নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায়। 

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে ভৌগলিক সীমারেখা ভুলে কেবলমাত্র ভাষার টানে দুই বাংলার মানুষ একই মঞ্চে তুলে ধরলেন বাংলা ভাষার জয়গান। 

দুপুর ১২টার দিকে বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি, যশোর-১ (শার্শা) আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধিদল নোম্যান্সল্যান্ডে শহিদ বেদীর পাদদেশে পৌঁছালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বিধায়ক শ্রীমতি বীনা মন্ডল, বনগাঁও পৌর চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ, সাবেক সাংসদ মমতা ঠাকুরের নেতৃত্বে ভারত থেকে আসা হাজার হাজার বাংলা ভাষী মানুষ বাংলাদেশিদের ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করে নেয়। 

এ সময় ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল, ২১ উদযাপন কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু ও সচিব শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল এবং ভারতের পক্ষে বিশেষ অতিথি বনগাঁও পৌর মেয়র গোপাল শেঠসহ অনুষ্ঠানে উভয় দেশের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো অংশ নেয়। 

একপর্যায়ে  দু’দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অস্থায়ী শহিদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন।

শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর উভয় দেশের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো শতস্ফূর্তভাবে অংশ নেয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। দুই দেশের জাতীয় পতাকা, নানা রং এর ফেস্টুন, ব্যানার, প্লে­কার্ড, আর ফুল দিয়ে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় নোম্যান্সল্যান্ড এলাকা। 

দুই বাংলার মানুষের এ মিলন মেলায় উভয় দেশের সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহের আমেজ সৃষ্টি হয়। একে অপরকে আলিঙ্গন করে সকল ভেদাভেদ যেন ভুলে যায় কিছু সময়ের জন্য।

ফুলের মালা, মিস্টি ও ফুল বিনিময় করে উভয় দেশের আবেগপ্রবণ অনেক মানুষ বাঙালির নাড়ির টানে একজন অপরজনকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। ক্ষণিকের জন্য হলেও স্তব্ধ হয়ে যায় নোম্যান্সল্যান্ড এলাকা।

“বাংলাদেশের মানুষের জন্য প্রাণ কাঁদে। তাই তো বারবার ছুটে আসি দুই দেশের বাঙালি বাংলাভাষী মানুষের পাশে। ভাষা দিবসের এই দিনে থাকে না কোন জড়তা। জয় বাংলা ধ্বনি দিতে আমাদেরও মন চায়। আমরা চাইনা কাঁটাতারের বেড়া। মিলেমিশে একাকার হয়ে থাকতে চাই যেমনটি করেছেন আমাদের পূর্বপুরুষেরা” এভাবেই মনের আকুতি প্রকাশ করছিলেন বারাসাত থেকে আসা দীলিপ বাড়ুই, হাবড়ার নমিতা দেসহ অনেকেই। 

৫২-এর ভাষা আন্দোলন ও ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, এদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্র বিকশিত হয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ আজ মাথা চড়া দিয়ে উঠেছে। দুই দেশের নেতৃত্বে এই জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা হবে। ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ভিতকে আরও শক্ত করবে। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি