ঢাকা, শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বেপরোয়া পাহাড়কাটায় ঝুঁকি বাড়ছে ভূমিকম্পের (ভিডিও)

হাসান ফেরদৌস, চট্টগ্রাম থেকে

প্রকাশিত : ১৩:৩৬, ১৩ মার্চ ২০২৩ | আপডেট: ১৩:৩৮, ১৩ মার্চ ২০২৩

চট্টগ্রামে পাহাড়কাটার মহোৎসব চলছে। প্রভাবশালী ব্যক্তি, নামী-দামী শিল্পগোষ্ঠী থেকে জনপ্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা কেউ পিছিয়ে নেই পাহাড়কাটায়। মানছে না হাইকোর্টের নির্দেশনাও। 

পরিবেশ কর্মিদের তথ্য অনুযায়ী, গেল কয়েক দশকে নির্বাচারে পাহাড় কাটার কারণে চট্টগ্রামে ধ্বংস হয়েছে দুই শতাধিক পাহাড়। শুধুমাত্র চট্টগ্রাম মহানগরীতে ধ্বংস করা হয়েছে ৯০টি পাহাড়। 

এসব পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা, আবাসন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। পাহাড় কাটার কারণে গত দেড় দশকে পাহাড় ধসে নিহত হয়েছে সাড়ে তিনশ’ নিরীহ মানুষ। 

নাগরিক আন্দোলনের নেতা কামরুল হাসান বাদল বলেন, “শহরে এতোগুলো পাহাড় রাতরাতি ধ্বংস হয়ে গেল, সমতল ভূমি বানিয়ে ফেলা হলো- এ বিষয়ে কারো শাস্তি হয়েছে এমন কোনো নজির আমরা দেখছিনা।”

বেপরোয়া এই পাহাড়কাটার ফলে চট্টগ্রামে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পাশাপাশি পরিবেশগত বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা পরিবেশ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের। 

বেলা চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সমন্বয়ক আলিউর রহমান বলেন, “রিক্টারস্কেল ৭-এর উপর ভূমিকম্প হলে এসব ভবন ধসে যাবে এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে।”

যারা পাহাড় কাটছেন তারা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে জানান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ’র এই বোর্ড সদস্য। আবার পাহাড় কাটার শাস্তি হিসেবে জরিমানার পরিমাণ কম হওয়ায় কেউই তোয়াক্কা করছে না।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ বোর্ড সদস্য স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, “প্রশাসন কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তর সবাই জানে কারা এই কাজগুলো করে। যেহেতু এটা বন্ধের ইচ্ছা কারোর নেই, আমরা খুবই সংকিত ১০-১৫ বছর পরে চট্টগ্রামে কোনো পাহাড়ই থাকবেনা। যদি এই অবস্থা চলমান থাকে।”

চট্টগ্রামে যেসব পাহাড় এখনও অবশিষ্ট আছে সেসব পাহাড় রক্ষায় প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন নাগরিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি পাহাড়কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন তারা।

আইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন, “প্রত্যেকটা পাহাড়ের জন্য কর্তৃপক্ষ আছে। রেলওয়ের পাহাড় দেখার করার জন্য ভেতনভুক্ত স্টেট ডিপার্টমেন্ট আছে। সিটি কর্পোরেশনের যদি পাহাড় থাকে, কর্পোরেশনের স্টেট ডিপার্টমেন্ট আছে। যদি সেনাবাহিনীর হয়ে থাকে তাদেরও ডিপার্টমেন্ট আছে। আর ব্যক্তি মালিকানার যদি থাকেন তাহলে মালিক নিজেই উপস্থিত আছেন। তাহলে কি আমরা এই কর্তৃপক্ষগুলোকে আইনের আওতায় আনতে পারিনা?”

পাহাড়কাটা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তাবায়ন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা কার্যকর উদ্যোগ নেবে এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট সবার।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি