ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

সৌদিতে বাস দুর্ঘটনায় নিহত শ্যালক-দুলাভাই, পটুয়াখালীতে শোকের মাতম

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:০৩, ২৯ মার্চ ২০২৩

সৌদিতে নিহত শ্যালক-দুলাভাই

সৌদিতে নিহত শ্যালক-দুলাভাই

ওমরাহ পালন শেষে কর্মস্থল ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে মোজাম্মেল হোসাইনের (৪৫) বাড়ি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ছৈলাবুনিয়া গ্রামে। নিহত অপর বাংলাদেশী সাগর জোমাদ্দার, সম্পর্কে নিহত মোজাম্মেলের শ্যালক। তার বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের বটতলা গ্রামে। মৃত্যুর সংবাদে তাদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। 

জীবিকার অন্বেষনে ২৩ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান মোজাম্মেল হোসাইন। সৌদির আল কাসিম প্রদেশে মোজাম্মেলের রেস্টুরেন্টের কাজে যোগ দিতে এক বছর আগে দেশ ত্যাগ করেন সাগর। 

তাদের আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ছয় ভাইবোনের মধ্যে ছোট ছিলেন মোজাম্মেল। মোজাম্মেলের মেঝ ভাই আব্দুল বারেক মৃধার ছেলে ইব্রাহিম হোসেন জুয়েল বলেন, ২৩ বছর আগে তার চাচা কাজের জন্য সৌদি আরব যান।  সর্বশেষ ৮ বছর আগে তিনি দেশে ফিরেছিলেন। তখন জায়গা জমি বিক্রি করে সৌদি আরবে ফিরে গিয়ে হোটেল ব্যাবসা শুরু করেন। বছর খানিক আগে কাজে সহায়তার জন্য শ্যালক সাগরকে নিয়ে যান। এবছর ঈদের পরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাদের।

তিনি আরও জানান, ওমরাহ পালন শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনা তাদের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। তার এক বন্ধু ফোন করে মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন। তাদের মরদেহ একটি সরকারি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা আছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে দুজনের মরদেহ বাংলাদেশে আনার চেষ্টা চলছে। 

নিহত মোজাম্মেলের পরিবারে স্ত্রী ও তার দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বজনদের আহাজারি চলছে মোজাম্মেলের বাড়িতে। বাবার জন্য আহাজারি করছেন ছোট মেয়ে রানিম জাহান। আর বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন স্ত্রী রুবিনা ইয়াসমিন। 

মোজাম্মেলের স্ত্রী রুবিনা বলেন, ৮ বছর পরে এবছর দেশে আসার কথা ছিল তার। তার আগেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন। এখন সরকারের কাছে অনুরোধ তাদের লাশ যেন দেশে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়।

মোজাম্মেলের ছোট মেয়ে রানিম জাহান বলেন, আমি যখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি তখন আমার বাবা সৌদি গিয়েছে। ৮ বছর তাকে আমি দেখিনি। ভিডিও কলে কথা না হলে আমি তার চেহারা ভুলেই যেতাম।

সৌদি আরবে যাওয়ার আগে বিয়ে করেছিলেন সাগর। শান্তা আক্তারের সঙ্গে দুই মাস সংসার করেই দেশ ছাড়েন তিনি।

সাগরের স্ত্রী শান্তা আক্তার বলেন, ফোনে তার মৃত্যুর খবর জানতে পারি কিন্তু সে কথা আমার বিশ্বাস হয়নি।  কিছুদিন আগেও ভিডিও কলে সে বলেছিল ঈদে সবার জন্য কেনাকাটা করতে টাকা পাঠাবে। কিন্তু তার আগেই আল্লাহ তাকে না ফেরার দেশে নিয়ে গেল। মাত্র দুই মাস সংসার করেছি, সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি