ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ভাসমান ট্রলারে পাওয়া ১০ মরদেহের পরিচয় মিলেছে

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৫৬, ২৪ এপ্রিল ২০২৩

কক্সবাজার নাজিরাটেক সমুদ্র উপকূলে ভাসমান মাছ ধরার ট্রলার থেকে উদ্ধার গলিত মরদেহগুলোর পরিচয় মিলেছে। 

রোববার সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে এসে স্বজনরা তাদের পরিচয় সনাক্ত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে সামশুল আলম (২৩), শাপলাপুর ইউনিয়নের মিটাছড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), জাফর আলমের ছেলে সওকত উল্লাহ (১৮), মুসা আলীর ছেলে ওসমাণ গনি (১৭), সাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ (১৪), মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবির (২৮), চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪), শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান (৩৫) ও চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক জিয়া (২৫)।

এর মধ্যে চকরিয়ার উপজেলার কোনাখালী উপজেলার জঙ্গলকাঁটা গ্রামের জসীম উদ্দিনের ছেলে মো. তারেক মিয়ার (২০) মরদেহ শনাক্ত করার কথা জানিয়েছেন তার মা জোছনা বেগম (৪৫)।

তিনি হাসপাতাল চত্তরে বলেন, “আমার ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। ৭ এপ্রিল ইফতারির পর সে বটতলি স্টেশনে আসার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ ছিলনা।”

পরে জোছনা বেগম খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারেন একই এলাকার সাইফুল্লাহ ও শাহজাহান নামে আরও দুই যুবক নিখোঁজ আছেন। যদিও তাদের পেশা জানেন না তিনি।

ছেলের জন্মগতভাবে ডান হাতের চারটি আঙ্গুল একসঙ্গে লাগানো এবং কনিষ্ঠা নেই- সেই দেখে শনাক্ত করেছেন জানিয়ে জোছনা বেগম আরও বলেন, “আমার ছেলে যে সাগরে গেছে সেটা আমি জানি না। সে তো রাজমিস্ত্রির কাজ করে।”

ভাসমান ট্রলারে ১০ লাশ: যা যা জানা যাচ্ছে
মরদেহের একটি মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠেছড়ি এলাকার সাহাব উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলামের (২৩)। বিকালে তার মরদেহ এসে শনাক্ত করেছেন তার বাবা। সাইফুল পেশায় দিনমজুর; খেত-খামারে কাজ করতেন।

বিকালে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম জানান, রোববার দুপুর থেকে কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের টিমসহ স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় ট্রলারটি কূলে ভিড়ানো হয়। দীর্ঘ তিন ঘন্টা ধরে ট্রলারের ভেতরের কাঠের পাটাতন খুলে একে একে ১০টি লাশ উদ্ধার করা হয়। 

তিনি জানান, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। ধারণা করা যাচ্ছে ডাকাত দল গভীর সাগরে তাদের হত্যা করে ট্রলারের ভেতরে কাঠের পাটাতনে পেরেক লাগিয়ে দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় শনাক্তে সিআইডি ও পিবিআই এর ক্রাইম সিন টিমকে খবর দেয়া হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে জানা যায় ১০-১২ দিন আগে মহেশখালী থেকে একটি ফিশিং ট্রলার গভীর সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল। 

ফায়ার সার্ভিসের কক্সবাজার স্টেশন অফিসার খান খলিলুর রহমান জানান, ট্রলারের ভেতর থেকে উদ্ধার প্রতিটি মরদেহ বিকৃতি হয়ে গেছে। প্রত্যেকের হাত পা বাধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। তাদের প্রত্যেককে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। 

এদিকে স্থানীয় জেলেদের দাবি, কিছুদিন আগে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে সাগরে একটি মাছ ধরার ট্রলারে একদল ডাকাত হামলা চালায়। তখন ডাকাতরা লুটপাট করে জেলেদের খুন করেছে। তাদের ধারণা, নিহতরা মহেশখালী চকরিয়া কুতুবদিয়া বা আশেপাশের এলাকার জেলে হতে পারে। 

তবে ফিশিং ট্রলারটির মালিকানা দাবি করে ঘটনাস্থলে কেউ আসেনি। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি