ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

সেতু নির্মাণে ধীরগতি, চরম ভোগান্তিতে শার্শার মানুষ

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:৫৩, ২২ মে ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

যশোরের শার্শার নাভারণ হতে গোড়পাড়া সড়কের পৃথক দুটি স্থানে বেতনা নদীর উপর দুটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলেও চলছে ধীর গতিতে। বহুদিন পরে শার্শা উপজেলার কাজিরবেড় ও গাতিপাড়াসহ এ অঞ্চলের মানুষের কাঙ্খিত স্বপ্ন যেন বিষাদে রূপ নিয়েছে।

বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে মাত্র ৬০ ও ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ায় নিত্য চলাচলসহ নানাবিধ সমস্যা ও ব্যবসা বাণিজ্যে চরম লোকসানের কবলে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষেরা।

বর্তমানে চলাচলের রাস্তা অনুপযোগী হওয়ায় স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শতভাগ ক্লাসে হাজির হতে পারছেন না। নানা রকম প্রতিবন্ধকতা ঠেলে কিছু শিক্ষার্থী ক্লাসে হাজির হলেও অনুপস্থিত থাকছেন প্রায় ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী। অতিদ্রুত সেতু দুটি দৃশ্যমান দেখতে চান তারা।

জানা যায়, গত ২০২২ এর ৯ জানুয়ারি এ কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের আগামী ৩ জুলাই শেষ করার তারিখ নির্ধারণ করেছে যশোরের আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

দীর্ঘদিনের পুরাতন ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ভেঙে ৬০ মিটার লম্বা সেতু দুটি তৈরি করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ (এলজিইডি)। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি একই সাথে দুটি সেতুর কাজ শুরু করার কথা থাকলেও সেতু নির্মাণ কাজ কচ্ছপ গতিতে চালিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সেতু নির্মাণের কাজ এক বছর পেরিয়ে গেলেও বিভিন্ন জটিলতায় কাজ সব মিলিয়ে ৬০ ও ৪০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে দুটি সেতু জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। দু’গ্রামের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও সেতুতে প্রায়ই ঘটতো ছোটবড় দুর্ঘটনা।

এ অবস্থার প্রেক্ষিতে সেতু দুটির কাজ হাতে নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ। তবে কার্য জটিলতায় সময় কিছুটা পার হয়ে গেলেও আগামী তিন মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা জানায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। 

দুটি সেতুতে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ১১ লাখ টাকা।

স্থানীয়রা জানান, সেতু নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিনের দাবি ছিল তাদের। সেতু দুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে দুই গ্রামের মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনাময় দ্বার খুলবে। তবে সময়মত কাজ শেষ না হওয়ায় জনভোগান্তিতে রয়েছে দুই গ্রামের মানুষসহ আশেপাশের হাজার হাজার মানুষ। 

নির্মাণকাজ চলাকালে নদীর দুই পারের মানুষের চলাচলের জন্য কাঠের সেতু নির্মাণে প্রকল্পে অতিরিক্ত টাকা বরাদ্দ ধরা আছে। এতে একটু বৃষ্টি হলেই মানুষের চলাচল যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি বাঁধে পানি আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নদীপাড়ের চায়ের দোকানে বসা স্থানীয় লোকজন বলেন, নদীর ওপরে যে উচ্চতায় সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে, তা যথেষ্ট নয়। বর্ষা মৌসুমে সেতুর নিচে ফাঁকা জায়গা থাকবে কম। ভবিষ্যতে নৌযান চলাচল করতে পারবে না। তা ছাড়া নির্মাণকাজে অত্যন্ত ধীরগতি। সেতু দুটি চালু হওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারণ, দুই এলাকার গ্রামের মধ্যে গাড়িতে চলাচল করতে অন্তত সাত কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে। এতে দুর্ভোগ বাড়ছে।

শার্শা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুজা উদ দৌলা বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের খেয়ালখুশিমতো সেতুর নির্মাণকাজ করছে। মূল সেতু নির্মাণের সময় চলাচলের জন্য অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করে দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা দেওয়া হয়নি। নদীর মধ্যে মাটি ফেলে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে পথ তৈরি করা হয়েছে। এতে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে পানিপ্রবাহে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে।’

যশোরের আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সুখেশ মজুমদার বলেন, ইতিমধ্যে গাতিপাড়া খেয়াঘাট সেতুর কাজ ৬০ শতাংশ এবং কাজির বেড় সেতুর ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকী কাজ আগামী ৩ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। এখন জনভোগান্তি হলে কিছু করার নেই।

যশোর এলজিইডির ফিল্ড রেসিডেন্স ইঞ্জিনিয়ার নুরুল ইসলাম বলেন, দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে। আশা করছি, শিঘ্রই কাজ শেষ হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যেন ভালভাবে চলাচল করতে পারে সেজন্য পাশেই কাঠের সেতু উপযোগী করে তোলা হয়েছে, জনভোগান্তি কমে আসবে।

শার্শা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) এম এম মামুন হাসান বলেন, কার্যজটিলতায় সেতু দুটির নির্মাণ কাজের সময়সীমা এক বছর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হবে। যথা সময়ে কাজ শেষ করতে করণীয় বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি