ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪

র‌্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু: তদন্ত কমিটির কার্যক্রম শুরু

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:১০, ৩০ মে ২০২৩

নওগাঁয় ‌র‌্যাব হেফাজতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে তদন্ত কমিটি।

সোমবার দুপুর আড়াইটায় নওগাঁ সার্কিট হাউসে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে তদন্ত কমিটি।  রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। 

হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের এই তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন টীমের আহবায়ক মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিবের (সমন্বয়ক ও সংস্কারক) মাহমুদুল হোসাইন খান। 

এই কমিটিতে রয়েছেন আরও দুজন অতিরিক্ত সচিবসহ নওগাঁর বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আবু শামীম আজাদ, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমতিয়াজুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডাক্তার আবু হেনা মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামান সরকার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আব্দুল করিম এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ গাজিউর রহমান। তবে অতিরিক্ত দুই সচিবের নাম পাওয়া যায়নি।

কমিটি পর্যায়ক্রমে সুলতানা জেসমিনের মামা নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর এ কে এম নাজমুল হক মন্টু, ভাই সুলতান মাহমুদ সোহাগ, এক মাত্র ছেলে বায়োজিদ হোসেন সৈকত, জেসমিনের ভগ্নিপতি আমিনুল ইসলাম, গ্রেফতারের প্রত্যক্ষদর্শী ডাক্তার রুস্তম আলী এবং সুলতানা জেসমিনের ভাড়া বাসার মালিক দেলোয়ার হোসেন দুলালের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। 

নিহত জেসমিনের মামা এ কে এম নাজমুল হক মন্টু বলেছেন, তার ভাগ্নিকে যুগ্ম সচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তা এনামুল হকের মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২২ মার্চ বেলা সাড়ে ১০টার দিকে শহরের মুক্তিরমোড় নওযোয়ান মাঠ এলাকা থেকে র‌্যাবের গাড়িতে উঠিয়ে নেয়া হয়। পরে তার মৃত্যুর খবর পাই, এটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করে দায়ীদের শাস্তি দাবি করেন তিনি। 

এর আগে তদন্ত কমিটি তার জবানবনন্দি গ্রহণ করেছেন। তবে তদন্ত কমিটির কাছে তিনি কি বলেছেন তা তিনি এই মুর্হূতে বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

একইভাবে জবানবন্দি প্রদানকারী সুলতানা জেসমিনের ভাই একই দাবি করে বলেছেন, আমার বোন সম্পূর্ণ সুস্থ্য ছিল। র‌্যাবের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনিও তার বোনের এই মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় চকদেবপাড়া জনকল্যাণ স্কুলপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে শহরের কালিতলাস্থ নওগাঁ পৌরসভা ও চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাচ্ছিলেন জেসমিন। এর দীর্ঘক্ষণ পর হঠাৎ পরিবারের লোকজন সংবাদ পান যে তাকে অসুস্থ্য অবস্থায় নওগাঁ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নওগাঁ হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদানের পর অবস্থার অবনতি হলে ঐদিন বিকালেই তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ মার্চ সকালে তার মৃত্যু হয়।

এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে গত ৫ এপ্রিল জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় জুডিশিয়াল ইনকুয়ারি চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট মনোজ কুমার ভৌমিক নামে এক আইনজীবী। ওই রিটের প্রেক্ষিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত ০২ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের (সমন্বয় ও সংস্কার) এর নেতৃত্বে ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির মুখোমুখি করা হবে যুগ্মসচিব এনামুল হককে। তার অভিযোগের কারণেই র‌্যাব গত ২২ মার্চ সকালে শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে জেসমিনকে তুলে নেয়। এর সঙ্গে র‌্যাবের যে ১১ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে কমিটি।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি