ব্রাহ্মণবাড়িয়া ভূমি অফিসের সেবায় আমূল পরিবর্তন
প্রকাশিত : ১৫:০৩, ১৪ জুন ২০২৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভূমি অফিসের সেবায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। যার সুফল পাচ্ছেন সেবা নিতে আসা জনসাধারণ। একসময় ভূমি অফিসে কাজ করতে এসে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হতো। সে বিড়ম্বনা এখন আর নেই।
সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মোশাররফ হোসাইনের বহুমূখী উদ্যোগের ফলে সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সেবা এখন অনুকরণীয়। মূলত সরকারের ভাবমূর্তি উন্নয়নের পাশাপাশি ভূক্তভোগী জনসাধারণকে স্বস্তি দিতেই সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে ভূমি অফিসের সকল কার্য প্রণালী প্রণয়ন করা হয়েছে।
একদিকে যেমন কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি দ্রুত ও সহজভাবে ই-নামজারি, জমা খারিজ, খতিয়ান সংশোধন থেকে শুরু করে সকল ভূমি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কর্মরতদের কাজেরও গতি সঞ্চার হয়েছে। দায়িত্ব নেয়ার ৮ মাসের মধ্যে ভূমি সেবার মান বদলে দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন ভূমি কর্মকর্তা মোঃ মোশাররফ হোসাইন।
এতদিন ধরে এই ভূমি অফিস নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে যে আক্ষেপ ছিল তা এখন অনেকটাই গুটিয়েছে। শুধু ভূমি অফিসই নয়, বিভিন্ন অনিয়ম রোধেও সোচ্চার তিনি। অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে কৃষি জমি ধ্বংসকরণ রোধ, ভেজাল বিরোধী অভিযানসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছেন।
সদর উপজেলায় যোগদানের পর প্রায় ৩০টিরও বেশি অভিযান পরিচালনা করেছেন তিনি।
জানা যায়, ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা ভূমি অফিসে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদান করেন মোঃ মোশাররফ হোসাইন। এরপর তিনি সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে উদ্যোগী হন। প্রতিদিনই ভূমির জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে শতাধিক আবেদন জমা পড়ে সদরের এই দপ্তরটিতে। আবেদনের বিপরীতে ত্বরিত সেবা প্রদানে নেয়া হয় ব্যবস্থা।
সমন্বিত এই ব্যবস্থার দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিতে তিনি সম্প্রতি প্রতিটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন। তহসিলদারসহ সকলকে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের কঠোর নির্দেশ দেন। সেবা নিতে আসা কেউ যেন বঞ্চিত না হয় এবং ভোগান্তিতে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দেন।
এতে করে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কাজের গতি আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়ে যায়।
জানা যায়, নামজারি ও জমা খারিজ সংক্রান্ত বিষয় ৭-৮ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। এছাড়া ই-নামজারি, খতিয়ান সংশোধন, দেওয়ানী আদালতের রায় ও আদেশমূলে রেকর্ড সংশোধন, অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদান, হাট-বাজারের চান্দিনা ভিটি বন্দোবস্ত প্রদান, অর্পিত সম্পত্তির লীজ প্রদান ও নবায়ন ও ভূমিহীনদের মাঝে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত দ্রুত সময়ে প্রদান এবং সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
সেবা নিতে আসা কয়েকজন জানান, আগে কখনো এত দ্রুততম সময়ে নামজারি পাওয়া যায়নি। এক সময় এই অফিসে এলে মনে ভীতি কাজ করত। দুর্ভোগও কমেছে।
গোকর্ণ গ্রামের বাচ্চু মিয়া জানান, খতিয়ান সংশোধনের জন্য ৯-১০ দিন আগে এসেছিলাম। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যাটির সমাধান হয়েছে। সরাসরি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত কাগজপত্র প্রদানের মাধ্যমে সংশোধনের কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
সহকারী কমিশনার ভূমি মোশাররফ হোসাইন বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনায় কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। সাধারণ মানুষ দ্রুত সেবা পেয়ে খুশি। দেশের মানুষের, সরকারের ও ভূমি কার্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে এমন কাজে কোনো আপোষ করব না।
এর আগে তিনি জেলার নবীনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এএইচ
আরও পড়ুন