ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

বেনাপোলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮০ কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় 

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:০৬, ১১ জুলাই ২০২৩

দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল কাস্টম হাউজে গেল ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। 

এসময় ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে আমদানি কম হয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ৯২১ মেট্রিক টন পণ্য। বেনাপোল কাস্টম সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

কাস্টমস ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে ডলার সংকটের কারণে খাদ্যপণ্য ছাড়া অন্য পণ্য আমদানিতে ব্যাংক এলসি খুলছেনা। এতে ব্যবসায়ীরা চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আমদানি করতে পারছে না। ফলে রাজস্ব আদায় কমেছে।

বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও ব্যবসায়ীরা বলেন, কাস্টসস ও বন্দরের নানা রকম হয়রানি আর বন্দর অব্যবস্থাপনার কারণে অনেক ব্যবসায়ী বেনাপোল বন্দর ছেড়ে অন্য বন্দরে চলে গেছে। 

অভিযোগ রয়েছে, কাস্টমস ও বন্দরের কর্মকর্তাদের নানা অনিয়মের কারণে গত ১০ বছর ধরে বেনাপোল কাস্টম হাউজে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারেনি।

বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, গেল ২০২২-২৩ অর্থবছরের পণ্য আমদানি হয়েছে ২০ লাখ ৩৫ হাজার ৪৯৯ মেট্রিক টন। আর ২০২১-২২ অর্থবছরের পণ্য আমদানি হয়েছিল ২১ লাখ ৭৯ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন। আমদানি কম হয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ৯২১ মেট্রিক টন। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ও কমে গেছে। 

গেল বছরে  (২০২২-২৩) বেনাপোল কাস্টমস হাউজে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা, সেখানে আদায় করা হয়েছে ৫ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ২৪৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, সেখানে আদায় হয়েছিল ৪ হাজার ১৪৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। ওই বছর ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৯৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। 

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি¦ মো: শামছুর রহমান বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের বেনাপোল দিয়ে বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। তবে বর্তমানে ডলার সংকটের কারণে সরকার এলসিতে শতভাগ মার্জিনের শর্ত দিয়েছে। আবার ব্যাংকগুলো ডলার সংকট দেখিয়ে এলসি খুলছেনা। যে কারণে গেল বছরে আমদানি কমে গেছে। আর আমদানি কমলে রাজস্বও কম আসবে এটাই স্বাভাবিক।

যশোরের আমদানিকারক এজাজ উদ্দিন টিপু বলেন, আমরা মোটরসাইকেল পার্টস আমদানি করে তা সারাদেশে বিক্রি করে থাকি। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে যশোরের কোন ব্যাংক এলসি খুলছেনা। যে কারণে আমরা চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আমদানি করতে পারেনি। পণ্য আনতে না পারার কারণে ব্যবসায়ীকভাবে লোকসান হচ্ছে। 

যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, সরকার এলসি করতে শতভাগ মার্জিন দেবার নিয়ম করেছে। গত কয়েক মাস ধরে ব্যাংকগুলো এলসি খুলছেনা। এতে আমদানির সাথে জড়িত হাজার হাজার ব্যবসায়ী অর্থনৈতিকভাবে দুরাবস্থায় রয়েছেন। একেতো বাণিজ্য ভালো নেই, তার উপর পণ্য আমদানি করতে না পারলে আমদানির সাথে জড়িতরা আর্থিকভাবে পঙ্গু হয়ে যাবে।

বেনাপোল কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার সাফায়েত হোসেন জানান, ডলার সংকটে ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে এলসি খুলতে পারছেনা। যে কারণে পণ্য আমদানি কমে গেছে। আর আমদানি কমলে আমাদের রাজস্ব আয়ও কমে যায়। তারপরও গত বছরের চেয়ে আমাদের রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ২৮ শতাংশ। 

ঈদের ছুটির কারণে জুন মাসের কয়েকদিন বন্ধ ছিল। সে কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম রাজম্ব আদায় হয়েছে। আর এখানে কোন ধরনের হয়রানি হয়না বলে  দাবি করেছেন তিনি।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি