ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

সৌদিতে মৃত্যু ওবাইদুলের বাড়িতে শোকের মাতম

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:৩৮, ১৬ জুলাই ২০২৩

সৌদি আরবের দাম্মামের আল-মনসুরা এলাকায় ফার্নিচারের কারখানায় আগুন লেগে নিহত নাটোরের ওবাইদুলের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। 

নিহত ওবাইদুল ইসলাম নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের মৃত দবির উদ্দিন প্রামানিকের ছেলে। ওবাইদুলের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তার বোনসহ পরিবারের সদস্যরা। 

তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, শুধু টাকা কামানোর জন্য বিদেশে গিয়ে ওবাইদুলকে অকালে ঝড়ে যেতে হলো। ১১ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট হয়েও পৃথিবী থেকে আগে বিদায় নিতে হলো ওবাইদুলকে। 

নিহতের বোন নাদিরা ,নাসিমা, হাসি ও মোর্শেদা বলেন, সবার ছোট ভাই ওবাইদুল ছিল তাদের  ১১ ভাইবোন ও ভাবিদের চোখের মনি। সকলেই তাকে আদর করতো। শুধু টাকা কামানোর জন্য সে সৌদি আরবে গিয়েছিল চারবছর আগে।  চারমাস পর দেশে ফিরে আসার কথা ছিল তার। বিয়ে দেয়ার জন্য তার জন্য মেয়ে খোঁজা হচ্ছিল। এখন তাকে শেষবারের মত গোসল করানোর সুযোগও হবে না। মুখ দেখারও সম্ভাবনা নাই। 

নিহতের তালিকার তার নাম নাই। সৌদিতে এলাকার অনেকেই কাজ করেন। তারা শনিবার সকালে ওবাইদুলের লাশের ছবি পাঠালে তারা সনাক্ত করেছেন ওই লাশ তাদের চোখের মনি ওবাইদুলের। ওখানে এলাকার যারা আছে তারা চেষ্টা করছেন ভাইয়ের নাম তালিকায় তোলার জন্য। 

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীসহ সৌদি প্রবাসীরা ওবাইদুলের মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী।

মোফাজ্জল নামে প্রতিবেশী একজন বলেন, তার ছেলে ইয়াদুলও সৌদি আরবে থাকে। তার চাচা ওবাইদুলের মৃত্যুর খবর পেয়ে শনিবার সকালে সে সেখানে গিয়ে তার চাচার মৃতদেহ সনাক্ত করে। ওবাইদুলের লাশ যেন দেশে আনা হয় সে ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

নিহতের ভাই মজনুর রহমান বলেন, দূতাবাসের মাধ্যমে নাটোরের তিনজনের মৃত্যুর কথা শুনেছেন। কিন্তু কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। বিষয়টি নলডাঙ্গা ইউএনওকে অবহিত করা হয়েছে। 

সৌদি প্রবাসী কামরুল ইসলাম বলেন, লাশ সনাক্ত হওয়ার পর তিনি সেখানকার পরিচিতদের সাথে কথা বলে তার নাম তালিকাভুক্ত করার জন্য বলেছেন। সৌদি আরবে অবস্থানরত চাঁনপুরের অনেকেই সেখানে গিয়ে লাশ সনাক্ত করেছেন। তারা পাসপোর্ট নম্বর প্রদান করার পর লাশ দেশে আনার চেষ্টা করছেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, তারা বিভিন্ন মাধ্যম চেষ্টা করছেন ওবাইদুলের মৃতদেহ দেশে আনার জন্য। এরপর তিনিসহ এলাকাবাসী এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার ওবাইদুলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহত ওবাইদুল খাজুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনর ফুফাতো ভাই। তবে দূতাবাস বা সরকারি কোন কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর কোন খবর নিশ্চিত করেনি। নিহতের স্বজনরা উপজেলা পরিষদ থেকে ফর্ম সংগ্রহ করেছেন মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য। 

উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ হতে ৩৫০ কিমি পূর্বে অবস্থিত আল আহসা শহরের হুফুফ শিল্প এলাকায় একটি সোফা কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৯ বাংলাদেশি ও ১ ভারতীয়সহ মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও ২ জন।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি