ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

আরসার সামরিক কমান্ডার নূরসহ গ্রেপ্তার ৬, অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:৫৫, ২২ জুলাই ২০২৩ | আপডেট: ১২:৫৬, ২২ জুলাই ২০২৩

কক্সবাজারে টেকনাফের গহীন পাহাড়ের গোপন আস্তানা থেকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নবাদি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি ‘আরসা’র সামরিক কমান্ডার নুর মোহাম্মদসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১৫। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে ৭টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও নগদ টাকা।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় র‌্যাব ১৫র কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। 

এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকার গহীন পাহাড়ে এ অভিযান চালানো হয়। 

র‌্যাব কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, টেকনাফের গহীন পাহাড়টিতে আরসা সন্ত্রাসীরা গোপন আস্তানা তৈরি করে 'টর্চার সেল’ গড়ে তুলে ছিল। ওখানে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চালানো হয় এ অভিযান।

এতে গ্রেপ্তার আরসার সামরিক কমান্ডার হাফেজ নুর মোহাম্মদ (২৮) কুতুপালং ক্যাম্পের দিল মোহাম্মদের ছেলে। গ্রেপ্তার হওয়া অপর ৫ আরসা সদস্য হলেন, ধলা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ হোসেন জোহার (৩০), ওবায়দুর রহমানের ছেলে মো. ফারুক হারেস (২৩), জমলুকের ছেলে মনির আহাম্মদ (৩৬), অলি আহমদের ছেলে নূর ইসলাম (২৯), হোসেনের ছেলে মো. ইয়াছিন (২১)।

ঘটনাস্থল থেকে ১টি ৭.৬৫ এমএম পিস্তল, ১টি বিদেশী রিভলবার, ১টি শর্টগান,  ৪টি দেশীয় তৈরি এলজি, ৩টি দেশীয় রামদা, গুলিসহ নগদ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব কমান্ডার আরও জানান, আরসার গোপন আস্তানার তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে প্রথমে আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প এর অন্যতম সামরিক কমান্ডার হাফেজ নুর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় অস্ত্র ও গুলি। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা খুন ও অপহরণসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে।

খন্দকার মঈন জানান, হাফেজ নুর মোহাম্মদের ‘আরসা’র ৩০-৩৫ জন সদস্য কুতুপালং ক্যাম্প ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় খুন, অপহরণ, ডাকাতি, মাদক, চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তারা পার্শ্ববর্তী দেশ হতে দুর্গম সীমান্তবর্তী অঞ্চল দিয়ে অস্ত্র চোরাচালান করতো বলে জানা যায়। 

হাফেজ নুর মোহাম্মদ তার দলের সদস্যদের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণের নিকট হতে খুন, অপহরণ ও গুমের ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করতো। চাঁদার অর্থ না পেলে অপহরণপূর্বক শারীরিক ও পাশবিক নির্যাতনসহ মুক্তিপণ আদায় করত। মুক্তিপণ না পেলে তারা খুন করে গহীন পাহাড়ে অথবা জঙ্গলে লাশ গুম করতো বলে জানা যায়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হাফেজ নুর মোহাম্মদ ২০১৬ সালে আরসা সদস্য আরিফ উদ্দিনের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আরসায় যোগ দেয়। নুর মোহাম্মদ কুংফু ও বিস্ফোরক তৈরিতে পারদর্শী। তার নেতৃত্বেই ক্যাম্পে হেড মাঝি শফি উল্লাহ্ হত্যাকাণ্ড, সালাম, সলিম, মালেক, হাবুইয়া, ইমান, আবুল মুনসুর, সালেহ্ হত্যাকান্ড এবং সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আলোচিত ৬ জন হত্যাসহ বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার তথ্য মিলিছে।

এছাড়া তারা অপহরণের নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায় করতো।

গ্রেপ্তারকৃতদের টেকনাফ থানায় সোপর্দ করার কথা জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, ক্যাম্পে আরসার সাড়ে ৪ শত সন্ত্রাসী সক্রিয় রয়েছে। এদের ধরতে র‌্যাব অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি