ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

নিরাপদ প্রত্যাবাসনের দাবিতে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৩৭, ২৫ আগস্ট ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত কয়েক হাজার রোহিঙ্গা তাদের দেশত্যাগের ষষ্ঠ বার্ষিকী উপলক্ষে নিরাপদে মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তনের দাবিতে আজ এখানে বিভিন্ন ক্যাম্পে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

একটি ক্যাম্পে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি মুসা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে আর বেশিদিন থাকতে চাই না। আমাদের একমাত্র দাবি আমাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে দ্রুত ফিরে যাওয়া।’

বাংলাদেশ ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় দিয়ে আসছে, যাদের বেশিরভাগই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় সামরিক দমন অভিযানের পরে সেখানে পৌঁছেছে। জাতিসংঘ এ অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূলের পাঠ্যপুস্তক উদাহরণ’ বলে অভিহিত করেছে এবং অন্যান্য অধিকার গোষ্ঠী এটিকে ‘গণহত্যা’ হিসাবে উল্লেখ করেছে।

মুসা বলেন, ‘আমরা আজ এখানে গণহত্যার শিকার, বেঁচে যাওয়া এবং প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আছি। সেই মর্মান্তিক দিনটির পর ছয় বছর কেটে গেছে এবং এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা অধরা রয়ে গেছে।’

প্রবল বৃষ্টির মধ্যে প্রায় ২৫,০০০ রোহিঙ্গা কয়েক ডজন সমাবেশে যোগ দেয়। এর মধ্যে বৃহত্তম সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয় কুতুপালং ক্যাম্পে। এখানে প্রায় ১০,০০০ রোহিঙ্গা যোগ দেয়।

মুসা দাবি করেন, ‘এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের কোনো সংস্থা বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রত্যাবাসনের জন্য কোনো গ্রহনযোগ্য পদক্ষেপ নেয়নি বরং আজকাল একটি স্বার্থন্বেষী মহল আমাদেরকে বাংলাদেশে অবস্থান করার পরামর্শ দিতে শুরু করেছে।’

তিনি বলেন, মাতৃভূমি ছেড়ে বসবাস করা রোহিঙ্গাদের জন্য অমানবিক।

বাংলাদেশ সরকার, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত উল্লেখযোগ্য মানবিক সহায়তাকে রোহিঙ্গারা কৃতজ্ঞতার সাথে স্বীকার করে।

ছয় বছর আগে কক্সবাজারে নির্বাসিত লাখো রোহিঙ্গাদের একজন সাঈদা বলেন, ‘আমরা শুধু ভুক্তভোগী নই, আমরা গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষ। আমরা বারবার তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।’

‘ন্যায়বিচার বিলম্বিত হয়েছে, ন্যায়বিচার অস্বীকার করা হয়েছে,’ সাঈদা চাপা গলায় বলেন।
সমাবেশে রোহিঙ্গারা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন:

১. রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের আরাকান রাখাইনের আদি বাসভূমি এলাকায় প্রত্যাবাসন করতে হবে।
২. আসন্ন গ্রীষ্মের মধ্যে নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও মর্যাদার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
৩. মিয়ানমারের অন্যান্য ১৩৫টি জাতিগত গোষ্ঠীর মতোই পূর্ণ নাগরিক অধিকারসহ মিয়ানমারের নাগরিকত্ব পুনরায় ফিরিয়ে দিতে হবে।
৪. রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে নাগরিক হিসাবে আগের মতো অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের অধিকার দিতে হবে।
৫. প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসংঘ সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের নিজদেশে ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি।
মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হলেও রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে আস্থার ঘাটতির কারণে প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা কয়েকবার ব্যর্থ হয়েছে।

সূত্র: বাসস

এসবি/ 

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি