ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

‘চিরকুট’ লিখে ঋণগ্রস্ত নারীর পদ্মায় ঝাঁপ!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:২১, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পরিবারের প্রয়োজনে একাধিক এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে পদ্মা নদী ঝাঁপ দিয়েছেন মিনু বেগম (৪৫) নামে এক নারী। তিনি এলাকায় মিনু ঘটক নামে পরিচিত ছিলেন।

বুধবার ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার নারিশা বাংলো এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই নারীকে উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবরি দল। নিখোঁজ মিনু পার্শ্ববর্তী শ্রীনগর উপজেলার মধ্য বাঘরা এলাকার বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ৭ টার দিকে নারিশা বাংলোর পদ্মাপারে বোরখা পরিহিত ওই নারীকে চলাফেরা করতে দেখেন তানিয়া নামে এক নারী।

কিছুক্ষণ পর তাকে দেখতে না পেয়ে, পদ্মার তীরে এগিয়ে আসেন। তখন নদীপারে মহিলার পরিহিত বোরখা, মোবাইল ও একটি চিরকুট পড়ে থাকতে দেখেন তানিয়া নামে ওই নারী। চিরকুটে লেখা ‘আমার মৃত্যুর জন্য কিস্তি দায়ী কিস্তির অমানুষ স্যারেরা।’ যদিও বানানে অনেক ভুল ছিল চিরকুটে।

পরে অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া না গেলে মিনুর মোবাইল থেকে তার স্বজনদের কাছে ফোন করে তানিয়া। এর আধাঘন্টা আগে মিনু তার মোবাইল থেকে তার স্বামী হাবীবুর রহমানকে ফোন দেয়। তিনি জানান, আমি নারিশা ডাকবাংলোর এখানে আছি। আমাকে মাফ করে দিয়ো। আমি আর কিস্তির এ যন্ত্রনা সহ্য করতে পারছিনা। স্বামী হাবিবুর তাকে বলেন, তুমি কিছু করবেনা। আমাদের বাড়িঘরজমি জমা সব বিক্রি করে দিয়ে আমাদের দেনা শোধ করবো। এর পর ফোনটা কেটে যায়। কিছুক্ষণ পর নিখোঁজ ওই নারীর স্বজন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবরির দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত চলে ডুবুরি দলের উদ্বার তৎপরতা।

মিনুর স্বামী হাবিবুর রহমান জানায়, প্রায় ৪০ লাখ টাকা খরচ করে একটি পাকা ভবন করেছি। যা এখনো অসমাপ্ত। এছাড়া ছেলেরা গত দুইমাস ধরে বিদেশ থেকে কোন টাকা না পাঠানোর কারনে তাঁর স্ত্রী এনজিওর কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয়। সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করতে না পাড়ায় এনজিও’র কর্মীরা প্রচন্ড চাপ দিচ্ছিল। ঘটনার বিষয়ে দোহার থানার শাইনপুকুর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরির্দশক শফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, নদীর পার থেকে ‘চিরকুট’ ও একটি বোরখা উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ নারীকে উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।

উদ্ধারকৃত চিরকুট ও স্বজনদের সাথে কথা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ঋণের চাপে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছেন ওই নারী। 

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি