ঢাকা, শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মদনা টিয়ার আবাসস্থল পানিহাতা শালবন ধ্বংসের পাঁয়তারা

শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:৫৭, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | আপডেট: ১২:৫৪, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বিপন্ন প্রায় মদনা টিয়ার পছন্দের আবাসস্থল শেরপুরের গারো পাহাড় অঞ্চলের পানিহাতা শালবন। এই শালবনটি আবারও ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে। বছর কয়েক আগেও শালবন কাটার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল কিন্তু প্রকৃতিপ্রেমী ও সামাজিক সংগঠনগুলোর প্রতিবাদের মুখে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে সম্প্রতি এই শালবন কাটার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

যে সমস্ত গাছ কাটা হবে ইতোমধ্যে সেসব গাছ মার্কিং করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পানিহাতা চার্চের পুরহিত রেভারন্ড চাম্বু ম্রং জানান, এ বনভূমিতে চার্চের ৪১ একর জমি রয়েছে। সেখানে শালবন রয়েছে। এসব শালগাছ কাটার কোনো উদ্যোগ স্থানীয় চার্চ কর্তৃপক্ষ নেয়নি। ঢাকাস্থ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে তাদের জানা নেই। 

কিন্তু পানিহাতা বনভূমির আওতাভুক্ত ময়মনসিংহের গোপালপুর রেঞ্জ অফিসার সাব্বির জাহাঙ্গীর জানান, পানিহাতা চার্চ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে গাছ কাটার জন্য একটি আবেদন পত্র পেয়েছেন। এ ব্যাপারে সরেজমিনে পরিদর্শনের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

শালবন নিধনের ব্যাপারে শেরপুর বার্ড করজারভেশন সোসাইটির সভাপতি সুজয় মালাকার ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুজ্জামান জানান, পানিহাতা চার্চ এলাকার বনভূমির শাল বাগান বিপন্ন প্রায় মদনা টিয়ার আবাসস্থল। তিন চার বছর আগে সেখানে মাত্র কয়েক জোড়া মদনা টিয়া ছিল। তখনও শাল গাছ কাটার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল কিন্তু তাদের প্রতিবাদের মুখে তা স্থগিত হয়। 

বর্তমানে ওই শালবনে দু’ শতাধিক মদনা টিয়া ছাড়াও পাহাড়ি ময়না, লটকন টিয়াসহ নানা প্রজাতির পাখির নিরাপদ আবাস স্থল। এ ছাড়াও এ বনাঞ্চলে বুনোহাতি, গোড়খোদক শুকর, উড়ুক্কু কাঠবিড়ালিসহ মহাবিপন্ন প্রাণীর দেখা মেলে। বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল হিসাবে ব্যবহৃত বনভূমি ধংস করা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থি। 

দেশের জীববৈচিত্র রক্ষার লক্ষ্যে ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত সভায় আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত সংরক্ষিত ও প্রাকৃতিক বনাঞ্চলের গাছ কাটার উপর নিষেধাজ্ঞা আইন অনুমোদিত হয়েছে। 

এ ব্যাপারে ঢাকাস্থ ‘সেইফ দ্য নেচার বাংলাদেশ’-এর চেয়ারম্যান আ ন ম মোয়াজ্জেম হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, বনাঞ্চলের গাছ কাটা তো দূরের কথা বাসা বাড়িতে বনজ গাছ রোপণ করলেও ওটা কাটতে বন বিভাগের অনুমতি লাগে। তাছাড়া পানিহাতা চার্চ কিভাবে ৪১ একর বন ভূমির জমি পেলো তা অনুসন্ধান করে দেখা দরকার। 

শেরপুরের প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব শালবন ধংসের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি