ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

 হাসপাতালে স্যালাইন সংকট

খোকসায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু!

খোকসা প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১৮:৫৫, ৩ অক্টোবর ২০২৩

কুষ্টিয়ার খোকসায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে শিশু থেকে মধ্যবয়সীর সংখ্যাই বেশী। তিন মাসে উপজেলার তিন শতাধিক মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়া হলে শীত আসা পর্যন্ত প্রচুর মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে ।

জুলাই মাসের শুরুর দিকে উপজেলার জানিপুর, শিমুলিয়া ও গোপগ্রাম ইউনিয়নে ব্যাপক হারে ডেঙ্গু জ্বর সাথে পেটের ব্যথায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ শতাধিক ছাড়িয়েছে বলে ধারণা করছে স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রশাসন।  ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গ্রাম গুলোতে প্রতিকার বা জনসচেতনা মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা যায়।

গত এক সপ্তাহে গ্রাম থেকে ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে আসা স্মৃতি, শিমুল, জাকারিয়া, সুনতা, পল্লবী, কামনা ও ইন্দ্রজিতসহ ১৫ জন শিক্ষার্থী শরীরে ডেঙ্গু সনাক্ত হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের বয়স ১২ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত  সেপ্টেম্বরে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রোগীর মধ্যে ৮৬ জনের শরীরে ডেঙ্গু সনাক্ত হয়। আক্রান্তদের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন শিশু রয়েছেন। এ ছাড়া ছাত্রসহ পূর্ন বয়সী ৬৪ জন পুরুষ এবং স্কুল ছাত্রী ও গৃহীনিসহ ৩৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তারা সবাই নিজ নিজ গ্রামে বসবাস করেন।

সূত্রটি আরো জানায়, উপজেলা ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তিন শতাধিক ছাড়িয়েছে বলে তারা মনে করা হচ্ছে। ডেঙ্গু পজেটিভ অধিকাংশ রোগী নিজের বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আক্রান্তদের মধ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পড়ুয়ার সংখ্যা বেশী। কৃষি শ্রমিক ও গৃহীনি আক্রান্ত হয়েছে ৪৫ শতাংশ । গত দুইদিনে ৩১জন ডেঙ্গু রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। অনেকেই আবার রেফার্ড নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদরের হাসপাতাল বা ক্লিনিকে  চলে গেছেন।

জানিপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের একতার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল। জ্বরের সাথে পেটের ব্যাথা নিয়ে ৫ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিল। জ্বরসহ অন্য উপসর্গ নেই তাই বাড়ি ফিরেছে। কিন্তু বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে পারছে না। পড়া মনে রাখতে পারছে না। মায়ের কাঁধে ভর করে চলা ফেরা করছে। খোকসা উপজেলার দক্ষিণ অঞ্চল শিমুলিয়া, বেতবাড়িয়া, একতারপুর, কমলাপুর সহ বিভিন্ন অঞ্চল ডেঙ্গু রোগীদের সংখ্যা বেশি এবং প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছে বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন ।

খোকসা হাসপাতাল সরে জমিনে ঘুরে দেখা গেছে ডেঙ্গু রোগীরা বেডে সিট না পাওয়ায় মেঝেতে এলোমেলোভাবে শুয়ে আছে । কেউ মশারি টাঙিয়ে আছে কেউ সাধারণ মানুষের মতো ঘোরাফেরা করছে । বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ডেঙ্গু রোগীরা জানান, আমরা বাইরে থেকে চড়া দামে স্যালাইন কিনছি । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন স্যালাইনের ব্যবস্থা করছে না । হাসপাতালের ড্রেনগুলো একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা সহ ডুবে যায় । চারিদিকে তাকালে অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন লক্ষ্য করা যায় । এ ব্যাপারে খোকসা উপজেলা হাসপাতালের ডাক্তার মোঃ কামরুজ্জামান সোহেল জানান, আমরা ডেঙ্গু রোগীদের ঠিকমতো সেবা দিচ্ছি । মশারি সহ যাবতীয়  ঔষধপত্র দেওয়া হচ্ছে । এ পর্যন্ত আমাদের হাসপাতাল থেকে কোন রোগী  মারা যায়নি । 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি