৯ দিনে ভারতে গেল সাড়ে ৬শ’ টন ইলিশ
প্রকাশিত : ১১:৪৬, ৭ অক্টোবর ২০২৩

বেনাপোল বন্দর দিয়ে গত ৯ দিনে ভারতে ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ৬শ’ মে: টন ৪৪০ কেজি ইলিশ। এবারের দুর্গাপূজায় ভারতে বিভিন্ন বন্দর দিয়ে মোট ৩ হাজার ৯৫০ মে: টন ইলিশ রপ্তানির কথা রয়েছে। ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা যাবে।
তবে দেশে ইলিশ সংকট, বাজারে দাম বৃদ্ধিসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রপ্তানি শেষ করা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। হাতে রয়েছে আর মাত্র ৫ দিন। সময়সীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন উভয় দেশের আমদানি-রপ্তানিকারকরা।
এমনকি ভারতীয় আমদানিকারকরা সময় বাড়ানোর দাবি নিয়ে ইতোমধ্যে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানান ওপারের আমদানিকারকরা।
এ বছর দেশের ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার ৯৫০ মে: টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে। তবে অক্টোবর মাস ইলিশ প্রজননের কারণে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ ও বিক্রি নিষেধাজ্ঞা জারিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রপ্তানি সমাপ্ত নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গত বছরও অনুমতির সব ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। এতে এ বছর রপ্তানির সময়সীমা আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন আমদানি-রপ্তানিকারকরা।
গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৯ কার্যদিবসে মাত্র ৬শ’ মে: টন ৪৪০ কেজি ইলিশ রফতানি হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ৭২ মে: টন, বুধবার (৪ অক্টোবর) ৮৩ মে: টন ৯০০ কেজি, মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ৯৮ মে: টন ৬০০ কেজি, ৩০ সেপ্টেম্বর ৯১ মে: টন ৫০০ কেজি, ২৭ সেপ্টেম্বর ৩১ মে: টন ৭৬০ কেজি, ২৬ সেপ্টেম্বর ৪৮ মে: টন ৯৮০ কেজি, ২৫ সেপ্টেম্বর ৫৬ মে: টন ৫০০ কেজি, ২৩ সেপ্টেম্বর ৪০ মে: টন ১০০ কেজি ও ২১ সেপ্টেম্বর ৭৭ মে: টন ১০০ কেজি।
সংশিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশে তুলনামূলক ইলিশের যোগান না থাকলেও প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে প্রতিবছর দুর্গপূজায় ওপার বাংলার মানুষের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে আসছে সরকার।
ইলিশ রফতানির খবরে বেনাপোলসহ আশপাশের এলাকার বাজারগুলোতে ইলিশ সংকট দেখা দিয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে লাগামহীন দাম বাড়ানোয় সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে রসনাবিলাস বাঙালির জাতীয় মাছ ইলিশ। চড়া দামের কারণেই মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষের অধিকাংশের পাতে এখনও ওঠেনি ইলিশ।
ইলিশ বিক্রেতারা জানান, ভারতে রপ্তানির কারণে ইলিশ মিলছে না আড়তগুলোতে, যা পাওয়া যাচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। ছোট ইলিশ ৫০০ থেকে হাজার টাকা ও বড় ইলিশ ২ হাজার থেকে ২২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
ইলিশ রপ্তানিকারক বেনাপোলের সততা ফিসের ম্যানেজার রকি মাহামুদ জানান, ইলিশ প্রজননের জন্য ২২ দিন ইলিশ ধরা ও ক্রয়, বিক্রয় নিষেধ করেছে সরকার। এ বছর ইলিশ রপ্তানির সময় বাড়ানো না হলে অনুমোদিত ইলিশ নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ রপ্তানি করা কঠিন হয়ে যাবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক আব্দুল জলিল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এবারের দুর্গাপূজায় ভারতে মোট ৩ হাজার ৯৫০ মে: টন ইলিশ রপ্তানির কথা রয়েছে। এর মধ্যে গত ৯ দিনে বেনাপোল দিয়ে ৬০০ মে: টন ৪৪০ কেজি ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে।
বেনাপোল মৎস্য অফিসের ফিশারিজ কোয়ারেন্টাইন অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারের বিশেষ অনুমতিতে ইলিশ রপ্তানি শুরু হলেও অনেকে প্রতিষ্ঠান এখনও ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি করতে পারেনি। ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত শেষ সময় থাকলেও ইলিশ প্রজননের কারণে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ ও বিক্রি নিষেধাজ্ঞা থাকায় ১১ অক্টোবরের পর আর কোন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হবে না।
এএইচ