ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

এক কেজি স্বর্ণসহ তিন বাংলাদেশি পেট্রাপোলে আটক

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৬:২২, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আবারও বেনাপোল কাস্টমস পেরিয়ে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে ১০টি (এক কেজি) স্বর্ণেরবারসহ তিন বাংলাদেশিকে আটক করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। 

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ভারতের ১৪৫ ব্যাটালিয়নের সীমান্তরক্ষী বিএসএফ এক বার্তায় আটকের এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানায়।

বিএসএফ জানায়, এই তিনজন বাংলাদেশী পাসপোর্টযাত্রী বাংলাদেশ কাস্টমস পার হয়ে পেট্রাপোল চেকপোস্টে এলে তাদের গতিবিধি সন্দেহ হলে তাদের ব্যাগ ও শরীর তল্লাশি করা হয়। এক পর্যায়ে মেশিনের মাধ্যমে তাদের পেটের মধ্যে স্বর্ণের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। পরে পায়ুপথ থেকে ১০টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য ৬৫ লাখ রুপি। 

এর আগে গত বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বেনাপোল কাস্টমস পেরিয়ে ওপারে ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস ইমিগ্রেশনে বিএসএফ সদস্যদের হাতে এরা আটক হয়। আটক ব্যক্তিরা তাদের পায়ু পথে স্বর্ণ বহন করছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ভারতের বনগার পেট্রাপোল থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন- শরীয়তপুরের চিকান্দী উপজেলার বিনোদপুর গ্রামের রাজ্জাক মুন্সীর ছেলে আবু বক্কর মুন্সী, ঢাকার ওয়াদালোদী  তুরাগ এলাকার রুস্তম শেখের মেয়ে পারভীন আক্তার (৪৪) ও মানিকগঞ্জের সদর এলাকার তারা গ্রামের পিয়ার আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম এমডি (৪৬)।

এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আড়াই কেজি ওজনের ২২টি স্বর্ণেরবারসহ আমদানি পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক চালক রাজু দাস, সঞ্জীব দাসকে আটক করে বিএসএফ। একই দিনে পাসপোর্টধারী যাত্রী রিবাউদ্দিনকে ৩টি স্বর্ণেরবারসহ আটক করে বিএসএফ। এছাড়া গত  ১৬ ফেব্রুয়ারি ৮৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণেরবারসহ আবু বক্কর হানিফা ও জিয়া উদ্দীন নামে দুই ভারতীয় পাসপোর্টধারীকে আটক করে বিএসএফ। 

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নাজরীন নাহার নামে এক বাংলাদেশি পায়ুপথে লুকিয়ে পাচারের সময় ৪ পিস স্বর্ণের বারসহ তাকে আটক করে বিএসএফ।

জানা গেছে, বেনাপোল কাস্টমসের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে স্বর্ণ পাচারের ‘গোল্ডেন রুট’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বেনাপোল স্থলবন্দর। তবে স্বর্ণ নিয়ে নির্বিঘ্নে বেনাপোল পার হয়ে গেলেও পেট্রাপোলে গিয়ে প্রায় প্রতিদিন ধরা পড়ছে চোরাকারবারীরা। এদিকে, পাচার রোধে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আরও জোরালো পদক্ষেপ নিলেও বাংলাদেশ কাস্টমসে এ নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই। 

অভিযোগ উঠেছে এসব পাচার কার্যক্রমে কাস্টমসের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে চোরাকারবারিদের সখ্য থাকতে পারে। ফলে স্ক্যানিং মেশিন মেরামত বা যাত্রীর ব্যাগেজ তল্লাশিতে অনীহা রয়েছে।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াতের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ৪টি স্ক্যানিং মেশিন স্থাপন করে। এর একটি মোবাইল স্ক্যানার স্থাপন হয় বন্দরের বাইপাস সড়কে পণ্য প্রবেশ দ্বারে। অত্যাধুনিক মেশিনটি পণ্যবাহী ট্রাকে আসা রাসায়নিক, মাদক, অস্ত্র ও মিথ্যা ঘোষণার পণ্য শনাক্ত করতে সক্ষম। এছাড়া বেনাপোল চেকপোস্ট ও রেল স্টেশনে আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন-কাস্টমস রুটে চোরাচালান রোধে আরও ৩টি স্ক্যানিং মেশিন বসানো হয়। 

স্ক্যানিং মেশিনটি কাস্টমসের পক্ষে পরিচালনা করে আসছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটস। তবে স্ক্যানিং মেশিনগুলোর মধ্যে ৩টি যান্ত্রিক ত্রুটিতে পড়ায় গেল ৪ মাস ধরে স্ক্যানিং কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এতে অবাধে আমদানি পণ্য ও পাসপোর্টধারী যাত্রীর মাধ্যমে স্বর্ণ পাচার ও মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে চোরাচালান ব্যাপকহারে বেড়েছে। এছাড়া ঢাকা-কলকাতা রুটে যাত্রী নিয়ে চলাচলকারী পরিবহনগুলোতে অনেকেই জড়িয়ে পড়ছেন চোরাচালানে।

স্ক্যানিং মেশিন তদারকিতে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটসের বেনাপোল অফিস ব্যবস্থাপক বনি আমিন বলেন, ‘স্ক্যানিং মেরামত করতে বড় অংকের অর্থের প্রয়োজন। চুক্তি অনুযায়ী কাস্টমস তার ব্যয় বহন করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় স্ক্যানিং মেশিন ৩টির কার্যক্রম বন্ধ আছে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি