পটুয়াখালীতে জোড়া খুনের রহস্য উদঘটন, মূল হত্যাকারী গ্রেপ্তার
প্রকাশিত : ১৫:৫৬, ৩ নভেম্বর ২০২৪
পটুয়াখালীতে চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটন করে মূল হত্যাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকারীকে আদালতে প্রেরণ করলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ রোববার (৩ নভেম্বর) প্রেসব্রিফিং করে গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়টি জানায় জেলা পুলিশ।
চলতি বছর পটুয়াখালী পৌর শহর সংলগ্ন বহালগাছিয়া এলাকায় নিজ বাড়িতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বৃদ্ধ দম্পত্তি আশরাফ আলী হাওলাদার (৭৭) ও তার স্ত্রী হোসনে আরা বেগম (৭০)। ক্লুলেস এ হত্যাকাণ্ডের তিন মাস ১৩ দিনের মাথায় মূলহত্যাকারী একই এলাকার বারেক গাজীর ছেলে মোহাম্মদ আলী (৩২)কে আটক করতে সক্ষম হলো পুলিশ।
পটুয়াখালী জেলা পুলিশের সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সাজেদুল ইসলাম জানান, গত ২০ জুলাই রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টায় মোহাম্মদ আলী নিজে ও তার সঙ্গীয় অপর চোরসহ তার ভাড়ায় চালিত ইজিবাইক (বোরাক) নিজে ড্রাইভ করে ওই দম্পত্তির বাড়িতে যায়। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রেঞ্জ নিজে বহন করে অপর আসামীসহ মৃত ব্যক্তিদের বাড়ীর মেইন গেইট টপকে পেছন দিক থেকে বসতঘরে প্রবেশ করে।
এ সময় ঘরের মধ্যে রক্ষিত মালামাল খোঁজাখোঁজির এক পর্যায়ে গৃহকর্তী বৃদ্ধা হোসনে আরা বেগম টের পেলে প্রথমে তারা শক্ত কাঠ দ্বারা হোসনে আরা বেগমকে মাথায় আঘাত করলে সে মারা যায়। তখন তারা মৃত নারীকে মেঝে থেকে উঠিয়ে খাটের উপর শুয়িয়ে দেয় এবং ঘরের মধ্যে মালামাল খুঁজাখুঁজির একপর্যায়ে মৃত নারীর স্বামী গৃহকর্তা আশরাফ আলী হাওলাদার গেইটের তালা খুলে গেইট দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে।
এ সময় শব্দ পেয়ে তারা ঘরের বাহিরে বাথরুমের কাছে গোপনে আশ্রয় নেয়। আশরাফ আলী ঘরে প্রবেশ করে তার স্ত্রীকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করলে আলি হেসেন অপর সঙ্গীসহ পুনরায় ঘরে প্রবেশ করে এবং তার হাতে থাকা রেঞ্জ দিয়ে প্রথমে বৃদ্ধ লোকটির মাথায় আঘাত করলে বৃদ্ধ সে মারা যায়।
এরপর আসামিরা উক্ত বাড়ির পশ্চিম পাশের পুকুর সংলগ্ন ওয়াল টপকে রেব হয় এবং তাদের সঙ্গে নিয়ে আসা ইজিবাইক নিয়ে চলে যায়।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (প্রশাসন) আহমেদ মাঈনুল হাসান জানান, তথ্য প্রযুক্তির সহয়তায় সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জেলা গোয়েন্দ পুলিশের নেতৃত্বে তৎপরতা চালিয়ে নিশ্চিত হয়ে হত্যাকান্ডের মূল আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামি দায় স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে কিনা কিংবা কোন ইন্ধনদাতা রয়েছে কিনা এ বিষয়ে ব্যাপক তদন্ত অব্যাহত আছে এবং তদন্তের স্বার্থে অপর আসামির নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।
এ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
এএইচ
আরও পড়ুন