ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

হাত হারানো শিশুটি ছটফট করছে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:২২, ২৩ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ০৯:২৩, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পরিবহণগুলো যেন লাগাম ছাড়া হয়ে পড়ছে। সড়ক দুর্ঘটনার নামে একরে পর এক মানুষ হত্যা করে যাচ্ছে। দেখেও যেন দেখার কেউ নেই। কয়েকদিন আগে রাজধানী ঢাকায় তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীবের হাত কেড়ে নিয়েছে দুটি বাস। এবার বগুড়ায় কেড়ে নিল সুমি নামের একটি শিশুর হাত একটি ট্রাক।

মায়ের হাত ধরে মহাসড়ক পার হচ্ছিল আট বছরেরম শিশু সুমি খাতুন। হঠাৎ মায়ের হাত থেকে ছুটে যায় শিশুটি। হোঁচট খেয়ে পড়ে মহাসড়কে। নিয়তি এখানেই খারাপ। মুহূর্তে ছুটে আসা ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয় তার বাঁ হাত। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কনুইয়ের ওপর থেকে।

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শেরুয়া বটতলা এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে রোববার বেলা দেড়টায় মর্মস্পর্শী এ দুর্ঘটনা ঘটে। পথচারীরা শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালেও শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কচি হাতটির খোঁজ আর মেলেনি।

আহত সুমিকে প্রথমে শেরপুর উপজেলার দুবলাগাড়ি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পরে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সুমি শেরপুর উপজেলার শাহ বন্দেগি ইউনিয়নের ফুলতলা দক্ষিণপাড়ার ভ্যানচালক দুলাল খানের মেয়ে। গ্রামের ব্র্যাক স্কুলে শিশু শ্রেণিতে পড়ে সে।

হাসপাতালের বারান্দায় শিশুটি মা মা বলে কাতরাচ্ছিল। কাটা হাতের ক্ষতস্থান ব্যান্ডেজ করা হলেও তাজা রক্তে ভিজে গিয়েছিল তা।
হাসপাতালে মেয়ের বিছানায় বসে নির্বাক তাকিয়েছিলেন মা মরিয়ম বেগম। মরিয়ম বলেন, তার স্বামী হতদরিদ্র ভ্যানচালক। বাড়িতে ছোট একটা মুদি দোকানও রয়েছে। তিন মেয়ের মধ্যে সুমি সবার ছোট। রোববার দুপুরে এলাকার একটি দাওয়াতে তিনি সুমিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ সে হাত থেকে ছুটে হোঁচট খেয়ে মহাসড়কে ওপর পড়ে যায়। ওই সময় বগুড়ার দিক থেকে আসা একটি পাথরবাহী ট্রাক তার হাতের ওপর দিয়ে চলে যায়।

সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শিশুটির খালু জানান, শিশুটিকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিকেল চারটার দিকে প্রথমে জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। এরপর একজন নার্স এসে এক ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করেন। ওই নার্স ছাড়া এখন পর্যন্ত কোনো চিকিৎসক সুমির খোঁজ নেননি, চিকিৎসাও দেননি। রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে ওয়ার্ডজুড়ে নার্সদের কাছে ছুটোছুটি করেছি, কেউ পাত্তা দিচ্ছে না।

জানতে চাইলে ওই ওয়ার্ডের একজন নার্স বলেন, রেজিস্ট্রার অনুযায়ী বেলা চারটায় শিশুটিকে জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সাড়ে চারটায় তাকে ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। এই ওয়ার্ডে এই মুহূর্তে কোনো চিকিৎসক না থাকলেও রয়েছেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানকার চিকিৎসক ইতিমধ্যেই শিশুটির কাগজপত্র দেখে চিকিৎসাও লিখে দিয়েছেন। এক ব্যাগ রক্ত দিতে বলেছেন। চিকিৎসা পেলেই রক্তক্ষরণ বন্ধ হবে।

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি