সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান
প্রকাশিত : ১৯:৪০, ৪ অক্টোবর ২০১৮
সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল– দেশের সর্ববৃহৎ এবং উত্তরাঞ্চলের সর্বপ্রথম অর্থনৈতিক অঞ্চলকে চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ। বুধবার বেজা কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ লাইসেন্স প্রদান করা হয়।
সড়ক, নৌপথ, আকাশপথ এবং রেলপথে যোগাযোগের সুব্যবস্থা সম্পন্ন এ অঞ্চলে উত্তরাঞ্চলের জনগণের জন্য কর্মসংস্থানের এক নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। এর ফলে ভারত, নেপাল এবং ভূটানের সঙ্গে বুড়িমারী, হিলি এবং বাংলাবান্ধা (তেতুলিয়া)– এর মাধ্যমে যোগাযোগের কারণে আমদানি-রফতানি এবং পণ্য পরিবহনের সুযোগ প্রসারিত হবে। যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জমির আয়তন ১০৩৫.৯৩ একর। এখানে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্র বৃদ্ধির জন্য একটি অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপো স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমে অবস্থিত এ অঞ্চল চালু হলে দেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগের সমন্বিত উদ্যোগে উত্তরাঞ্চলের জনগণের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি জীবনযাত্রার মানের উন্নতি হবে।
১১টি কোম্পানির সমন্বয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল লিমিটেডের মালিকানাধীন এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সম্ভাব্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রসমূহ হল – টেক্সটাইল, আপ্যারেল ও পাটজাত দ্রব্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, পাল্প ও কাগজ, সিরামিক, কেমিক্যাল দ্রব্য, অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক, প্লাস্টিক, চামড়াজাত দ্রব্য/জুতা, আইটি পার্ক, গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ, ফার্নিচার, এলপিজি টার্মিনাল, স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রক্রিয়াজাত মৎস্য এবং জাহাজ শিল্প।
এখানে ভূমি উন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং পরিসেবা ও অন্যান্য সুবিধাদি স্থাপনের জন্য মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এখানে পর্যায়ক্রমে ৫,০০,০০০ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে এসব উন্নয়ন কার্যক্রম সমাপ্ত হবে বলে প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়।
সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ, পানি ও অন্যান্য সুবিধাসমূহ নিশ্চিত করাসহ, এখানে কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (CETP), ডরমিটরি, ফাইভ স্টার হোটেল, স্বাস্থ্য সেবা, ডে কেয়ার, বিনোদন কেন্দ্রসহ বাণিজ্যিক এলাকা গড়ে তোলা হবে। এছাড়াও সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নের ফলে এক দিকে যেমন শিল্পের বিকেন্দ্রীয়করণ হবে অন্যদিকে বিপুল সংখ্যক লোকের কর্মসংস্থানের মাধ্যেমে কিছুটা হলেও ঢাকা শহরের উপর জনগনের চাক কমাতে সক্ষম হবে। সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল তাদের মূল প্রতিপাদ্য “ মানুষের কাছ শিল্প” বাস্তবায়নের ফলে উত্তরাঞ্চলের বিশেষ করে সিরাজগন্জ , পাবনা, বগুড়া ও নাটোর এলাকার মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল লিমিটেডকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বেজা ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে চলেছে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারি আওতায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পাশাপাশি সব আইন ও বিধি মেনে প্রাইভেট বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও জোন স্থাপনে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তিনি জানান, অদম্য বাংলাদেশের স্বপ্ন লালন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর (মিরসরাই ও ফেনী অর্থনৈতিক অঞ্চল) –এর অবকাঠামো কাজ দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে বলে জানান নির্বাহী চেয়ারম্যান।
এসএইচ/
আরও পড়ুন