ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

সাভারে পলিথিনে ৮ টুকরা লাশের রহস্য উদঘাটন

প্রকাশিত : ২০:২১, ২৫ নভেম্বর ২০১৮

রাজধানী ঢাকার উপকন্ঠ শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় পরিকল্পিতভাবে টাকা আদায়ের জন্য পোশাক শ্রমিককে অপহরণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে মৃতদেহটি গুম করার উদ্দেশ্যে মরদেহটি মস্তক বিচ্ছিন্ন করে কেটে ৮ টুকরোর পর পলিথিনে ভরে ফেলে দেওয়া হয় বলে আদালতের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে দুই হত্যাকারী।

রোববার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামানের আদালতে হাজির হয়ে ১৬৪ ধারায় এসব জবানবন্দি দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মনিরুজ্জামান মোল্লা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান মোল্লা বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে শনিবার রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর মিরপুর থেকে আলিম এবং টঙ্গী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আমানুল্লাকে আটক করা হয়। পরে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার দুপুরে আদালতে পাঠানো হলে তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

হত্যাকারীদের বরাদ দিয়ে এসআই আরও বলেন, ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামানের আদালতে হাজীর হয়ে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে দুই হত্যাকারীরা কেন এবং কিভাবে হত্যা করেছে, হত্যার পর কিভাবে লাশ কেটে টুকরো করে ফেলে দিয়েছে, কোথায় থেকে পলিথিন নিছে এবং অপহরণের পর কত টাকা আদায় করেছে, কোন নাম্বারে মুক্তিপনের টাকা নিয়েছে সেসব বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে।

তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শ্রমিককে টাকার জন্যই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পুর্বে চারজন মিলে তাকে কৌশলে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে।

একপর্যায়ে টাকা দিতে দেরি করায় অপহরণকারীরা পোশাক শ্রমিককে শ্বাসরোধে হত্যা করে মৃতদেহটি খাটের নীচে ঢুকিয়ে রাখে। পরের দিন মুক্তিপনের টাকা আদায় করে দুইজনের মৃতদেহটি কেটে ৮ টুকরো করে এবং দুইজনে পাহারা দেয়। এরপর মৃতদেহের টুকরোগুলো গুম করার জন্য পলিথিনে ভরে রাস্তায় ফেলে দেয় হত্যাকারীরা।

জবানবন্দি দেওয়া হত্যাকারীরা হলেন- ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার সিংদিয়া গ্রামের মো. আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. আলিম (৩২) এবং নরসিংদি জেলার রায়পুরা থানার আদিয়াবাদ নয়ারচর গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে আমানুল্লাহ (২৮)।

উল্লেখ্য, গত ১২ নভেম্বর সকালে আশুলিয়া নিশ্চিন্তপুর এলাকার আমেনা মসজিদের পাশে নিশ্চিন্তপুর-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়কের উপর পলিথেনের ব্যাগে ভরা অবস্থায় মস্তকবিহীন ৭ টুকরো মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর মানিক নামে একজনকে আটকের পর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৫ নভেম্বর নিশ্চিন্তপুর এলাকার আলী খাঁ’র বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি কক্ষের ড্রামের ভেতর থেকে খণ্ডিত মস্তকটি উদ্ধার করা।

এ সময় ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা জামা কাপড়, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোড়াসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়।

এদিকে মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকার পারভিন ভিলার ভাড়াটিয়া সম্পা আক্তার থানায় হাজির হয়ে মৃতদেহটি তার স্বামী ও হা-মীম গ্রুপের শ্রমিক মেহেদি হাসান টিপুর বলে সনাক্ত করেন। নিহত টিপু যশোরের বাঘারপাড়া থানাধীন অন্তরামপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে।

কেআই/  এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি