সাতক্ষীরার কলারোয়ার ৩৭ মাদ্রাসায় নেই শহীদ মিনার
প্রকাশিত : ১৭:৩৭, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
এখনও সাতক্ষীরার কলারোয়ায় অনেক বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় গড়ে ওঠেনি শহীদ মিনার। এছাড়া কলারোয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৩৭টি মাদ্রাসায় একটিও শহীদ মিনার নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কলারোয়া পৌরসভা ও উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে শহিদ মিনার রয়েছে ২৬টি। এর মধ্যে কলারোয়া ফুটবল ময়দানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, কলারোয়া সরকারি কলেজ, শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রি কলেজ, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ, কলারোয়া সরকারি প্রাইমারি স্কুল, গোপীনাথপুর সরকারি প্রাইমারি স্কুল নিয়ে ৬টি শহীদ মিনার রয়েছে কলারোয়া পৌরসভার মধ্যে।
এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্মিত শহীদ মিনারগুলো হলো, হেলাতলা ইউনিয়নের দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হেলাতলা আইডিয়াল হাইস্কুল, কাজীরহাট হাইস্কুল, ঝাঁপাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জয়নগর ইউনিয়নের সরসকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জয়নগর বদরুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয় ও ধানদিয়া হাইস্কুল, দেয়াড়া ইউনিয়নের খোরদো হাইস্কুল, কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের পানিকাউরিয়া হাইস্কুল, কেরালকাতা ইউনিয়নের কেকেইপি হাইস্কুল, চন্দনপুর ইউনিয়নের গয়ড়া বাজার, চন্দনপুর ইউনাইটেড কলেজ, বয়ারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চান্দুড়িয়া কেসিজি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হিজলদি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের সোনাবাড়িয়া সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বিবিআরএনএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের কেএল হাইস্কুল প্রাঙ্গণ।
এখনও শহীদ মিনার স্থাপনের তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলেও এলাকাবাসীরা সংবাদিকদের জানান।
একটি সূত্র জানায়, উপজেলায় ৩৭টি মাদ্রাসা রয়েছে। যার মধ্যে ৫টি সিনিয়র মাদ্রাসা রয়েছে। এসব মাদ্রাসার কোথাও শহীদ মিনার গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে হতাশার বিষয় হলো, উপজেলার ১২টি বেসরকারি কলেজের মধ্যে ৮টি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মাণ করা হয়নি শহীদ মিনার। কলারোয়া সরকারি কলেজ, শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রি কলেজ, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ ও চন্দনপুর ইউনাইটেড কলেজ ক্যাম্পাসে কেবলমাত্র শহীদ মিনার রয়েছে। কলারোয়ার এমআর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা সমাজসেবক মিজানুর রহমান নিজ অর্থায়নে ও অ্যাডভোকেট শেখ কামাল রেজার সহযোগিতায় বিগত কয়েক বছরে কলারোয়ার সোনাবাড়িয়া হাইস্কুল, হেলাতলা হাইস্কুল, কেকেইপি হাইস্কুল, চন্দনপুর কলেজ ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়া কলারোয়া ফুটবল মযদানে ‘স্বাধীনতা’ স্তম্ভ ও শহীদ মিনার তাঁরই অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়। যা কলারোয়ার ছোট-বড় সব মানুষের মুখে মুখে রয়েছে। নতুন প্রজন্মের অনেক শিক্ষার্থী কলেজ ক্যাম্পাসে এসে শহীদ মিনার দেখছে পাচ্ছে না। এদের অনেকেই তাদের স্কুল প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার দেখে এসেছে। শহীদ মিনারবিহীন অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মহান একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহীদদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে পারে না। বেসরকারি কলেজের চেয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের দিক থেকে অনেকটা এগিয়ে উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়। উপজেলার ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার রয়েছে। অপরদিকে উপজেলার ১০৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে কলারোয়া, গোপণিাথপুর, রঘুনাথপুর, ঝাঁপাঘাট ও বয়ারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সাতক্ষীরার কলারোয়ার ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব ভাষা সৈনিক প্রয়াত শেখ আমানুল্লাহ তার জীবদ্দশায় অনেক অনুষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ে তোলার কথা বলতেন। তিনি প্রয়াত হয়েছেন। কিন্তু তারা লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে প্রয়াত এই ভাষা সৈনিকের প্রতি আমরা প্রকৃত শ্রদ্ধা দেখাতে পারি না। এজন্য প্রয়োজন উদ্যোগ ও সমন্বিত প্রয়াস। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের চেতনা ছড়িয়ে দিতে ও নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেম-ভাষা প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে তোলা হোক শহীদ মিনার। এটা প্রত্যশা করে সব শিক্ষার্থীদের।
এসএইচ/
আরও পড়ুন