ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

মার্কিন সিনেটর হয়ে মায়ের কোলে কিশোরগঞ্জের চন্দন

প্রকাশিত : ২২:২৮, ১৬ মে ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

প্রতিটি মায়ের কাছে সন্তানরা চিরদিনই খোকা। তা সে যতবড়ই হোকনা কেন। মমতাময়ী মায়ের বুকে তাকে আসতেই হয়। তাইতো যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর হয়ে মূহুর্তেই স্বর্ণগর্ভা মায়েরকোলে ফিরে এসেছেন কিশোরগঞ্জের মুজাহিদুর রহমান চন্দন।

আর ছেলেকে কাছে পেয়ে যেন কিছুতেই আবেগ ধরে রাখতে পারছিলেন না মমতাময়ী মা সৈয়দা হাজেরা খাতুন (৯৩)। বয়স শতকের কোটা ছুঁই ছুঁই। অনেকদিন পর সন্তানকে দেখে যেন সাধ মিটছিল না তার। ছোট্ট খোকার মতো ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বার বার কপালে চুমু দিচ্ছিলেন। আর মায়ের আদরভরা ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সিনেটর ছেলের দু’চোখ দিয়ে ঝরে পড়ছিল আনন্দের অশ্রু।

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার সরারচর গ্রামে বৃদ্ধা মা আর সিনেটর ছেলের এমন ভালোবাসার দৃশ্য দেখে সেখানে উপস্থিত সবার চোখ ভিজে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনেটর শেখ মুজাহিদুর রহমান চন্দনের গ্রামের বাড়ি বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার সরারচরে। গত নভেম্বরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সিনেটর নির্বাচিত হন। সরারচরে গ্রামের বাড়িতে মা সৈয়দা হাজেরা খাতুন বসবাস করেন। মূলত তাকে দেখার জন্যই তিনি গ্রামের বাড়িতে এসেছেন।

হাজেরা খাতুন বলেন, কতদিন পর আমার ছেলেকে কাছে পেয়েছি। তাই এ আনন্দ কেমন করে ধরে রাখি! সন্তান জন্মের পরই আমার বিশ্বাস ছিল আমার ছেলে-মেয়েরা একদিন দেশ-বিদেশে সুনাম বয়ে আনবে।

বড় ছেলে শেখ মুজাহিদুর রহমান সিনেটর নির্বাচিত হওয়ায় তার চেয়ে বেশি আনন্দিত আর কেউ হয়নি জানিয়ে হাজিরা খাতুন বলেন, আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি মনে করি আমার ছেলে একদিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবে। হয়তো সেদিন আমি থাকব না।

দীর্ঘদিন পর মাকে কাছে পেয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি সিনেটর মুজাহিদুর রহমান চন্দনও।

বলেন, মূলত মাকে দেখার জন্যই ছুটে আসা। ৬ বছর আগে একবার দেশে এসেছিলাম। তবে এবারের আসাটা একেবারেই ভিন্ন। প্রায় ৩৯ বছর পর এই প্রথমবারের মতো দীর্ঘ সময় গ্রামের বাড়িতে সব ভাই-বোনদের একসঙ্গে দেখা ও তাদের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছে।

এ সময় তার বড় বোন তাহেরা হক, ছোট ভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল, ছোট বোন মুক্তিযোদ্ধা ডা. তাহমিনা আক্তার সামিয়া, আমেরিকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাদিরা রহমান ও নাহিদা আক্তার, ভাগ্নি জামাই মার্কিন নাগরিক ওয়েস্টিন সাসম্যান, ভাগ্নি মিশাসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক চন্দন দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় ডেমোক্রেটিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। ভাই-বোনদের বেশিরভাগই দেশের বাইরে থাকেন।

এদিকে সিনেটর নির্বাচিত হওয়ায় এলাকাবাসী চন্দকে সংবর্ধনা দেন। সিনেটর নির্বাচিত হওয়ায় বুধবার সন্ধ্যায় বাজিতপুরের সরারচর এলাকায় তার নিজের বাড়িতে এ সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়। সংবর্ধনার জবাবে সিনেটর শেখ মুজাহিদুর রহমান চন্দন বলেন, এলাকাবাসীর এ ঋণ কোনোদিন শোধ করতে পারবো না।

বাংলাদেশ দ্রুত উন্নতির দিকে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন আর আগের বাংলাদেশ নেই। মানুষের ভাগ্যের উন্নতি হয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। এ যেন এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রভূত উন্নতির প্রশংসা করেন তিনি।

 

আই// এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি