ঢাকা, শনিবার   ১৫ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বাগেরহাটে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় খাল খনন স্থগিত

প্রকাশিত : ২০:১৩, ১৭ জুন ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় বলইবুনিয়া (কালিকাবাড়ি) খাল খনন স্থগিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার। খাল পুনঃখননের নামে এসএ রেকর্ডের বাইরে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি খনন করে খাল কাটায় মোরেলগঞ্জ সহকারি জজ আদালতে নিষেদ্ধাজ্ঞার মামলা করেন এলাকাবাসী। সেই মামলার প্রেক্ষিতে ১১ জুন খাল কাটা বন্ধে একটি অস্থায়ী নিষেদ্ধাজ্ঞা প্রদান করেন আদালত। নিষেদ্ধাজ্ঞা প্রদানের তিনদিন পরে খাল কাটা স্থগিত করেন ঠিকাদাররা।

এ বছরের এপ্রিল মাসে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বলইবুনিয়া (কালিকাবাড়ি) খাল খনন শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার খুলনার আমিন এন্ড কোং নামের ওই প্রতিষ্ঠান।

বলইবুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক খম লুৎফর রহমান বলেন, বিশখালী নদীর শাখা খাল বলইবুনিয়া খাল শ্রেণীখালী মাঠ পর্যন্ত প্রবাহিত। এ খালটি এসএ রেকর্ড অনুযায়ী ১৮ থেকে ২২ ফুট ছিল। বর্তমানেও তাই আছে। কিন্তু নতুন দরপত্র ও কার্যাদেশ অনুযায়ী ঠিকাদাররা স্কেভেটর (মাটি কাটা মেশিন) দিয়ে অনেক চওড়া করে খাল খনন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যার ফলে ব্যক্তি মালিকানা জায়গা, ফসলি জমি, বাগান ও ঘর বাড়ি উপড়ে ফেলে খাল কাটা হচ্ছে। স্কেভেটর দিয়ে কাটার কারণে যে জায়গা থেকে খাল কাটা হচ্ছে তার বাইরে দুই পাশে প্রায় ২০ ফুট জায়গা নষ্ট হচ্ছে। যার ফলে জনসাধারণ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। উন্নয়নের সার্থে আমাদের খাল খনন করা প্রয়োজন। তবে বর্তমান দৃশ্যমান খাল ও এস এ ম্যাপের থেকে যদি বৃদ্ধি করতে হয়, তাহলে বিধি মোতাবেক ক্ষতিপূরণ প্রদান করে খাল কাটার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন সরকার দলীয় এ নেতা।

বলইবুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, এসএ ম্যাপের বাইরে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা কেটে খাল খননের ফলে এলাকাবাসীর অপূরনীয় ক্ষতি হচ্ছে। ঠিকাদারদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলা স্বত্তেও তারা জোরপূর্বক খাল কাটছিল। যারফলে এলাকাবাসীকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে আমরা আদালতের শরনাপন্ন হই। আদালত নিষেদ্ধাজ্ঞা প্রদান স্বত্ত্বেও তারা খাল কেটে যাচ্ছে। স্কেভেটর চালানোর জন্য খালের পাশে থাকা বলইবুনিয়া রাস্তার একশ মিটার জায়গার ইটের সলিং উঠিয়ে ফেলেছে ঠিকাদাররা।

বলইবুনিয়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আজিজুল হাকিম বলেন, নিজের মালিকানাধীন দুই কাঠা জমির উপর ঘর বেধে স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকি। যেভাবে খাল কাটা হচ্ছে, সেভাবে চললে আমার ঘর ও জায়গা খালের মধ্যে চলে যাবে।

বারেক শিকদার বলেন, স্কেভেটর দিয়ে আমার জায়গার বিভিন্ন ধরণের ফল গাছ ও নারকেল গাছ উপড়ে ফেলেছে খাল কাটার জন্য। এছাড়া আমার জায়গা কেটে খালের মধ্যে নিয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্থ হেমায়েত শিকদার, আলম খান, ওসমান শিকদার, আনিস শিকদার, লতিফ শেখসহ কয়েক জন বলেন, ইচ্ছেমত জোরপূর্বক খাল কাটার ফলে আমাদের অনেক জমি খালের মধ্যে চলে গেছে। জমিতে থাকা গাছ, ঘর, ফল গাছসহ ফসল নষ্ট হয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে এর ক্ষতিপূরণ চাই। ভবিষ্যতে খাল কাটলে যাতে মানুষের ক্ষতিগ্রস্থ না হয় এ জন্যও অনুরোধ করেন তারা।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আমিন এন্ড কোং এর স্থানীয় প্রতিনিধি বেল্লাল হোসেন বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ বন্ধ করেছি।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান খান বলেন, আদালতের নির্দেশনা পেয়ে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। আদালতের পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার আশ্বাস দেন তিনি।

এসি

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি