শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলা মামলায় ২৮ আসামী কারাগারে
প্রকাশিত : ১৬:২৪, ৩০ জুন ২০১৯
পাবনার ঈশ্বরদীতে ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি-বোমা হামলা মামলায় ২৮ আসামীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আসামীরা জামিন আবেদন করলে তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার দুপুরে পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুস্তম আলী তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন। এ মামলার আসামী সংখ্যা ৫২ জন। বাকিদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আদালত সুত্র থেকে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা সাংগঠনিক সফরে খুলনা থেকে রাজশাহী অভিমুখে ট্রেনযোগে যাত্রা করেন। যাত্রা পথে বিভিন্ন স্থানে পথসভা করেন তিনি। পাবনার ঈশ্বরদী স্টেশনে তার পূর্ব নির্ধারিত একটি পথসভায় বক্তব্য রাখার কথা ছিল। তাকে বহনকারী ট্রেনটি পাকশী স্টেশনে পৌঁছার পরপরই ঐ ট্রেনে ব্যাপক গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় ঈশ্বরদী জিআরপি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে ঐ দিনই একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার ৩ বছর পর ১৯৯৭ সালে ৩ এপ্রিল পুলিশ মোট ৫২ জনের নামে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করে।
পাবনা জজকোর্টের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ওবায়দুল হক জানান, মামলার ৫২ জন আসামীর মধ্যে ৩০ জন স্বশরীরে এজলাসে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন (এদের মধ্যে দুজন আগে থেকেই আটক ছিলেন)। বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আগামীকাল সোমবার একই আদালতে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করার কথা রয়েছে। পরে আসামীদের পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
কারাগারে পাঠানো আসামীরা হলেন, আব্দুল জব্বার, ফজলুর রহমান, শামসুল আলম, সেলিম আহমেদ, এনামুল কবির, হাফিজুর রহমান মুকুল, আনোয়ার হোসেন জনি, ইসলাম হোসেন জুয়েল, নেফাউর রহমান রাজু, শাহ আলম লিটন, মাহবুবুর রহমান পলাশ, আলমগীর হোসেন, তুহিন বিন সিদ্দিক, পলাশ, রেজাউল করিম শাহিন, ফিরোজুল ইসলাম পায়েল, কল্লোল, শ্যামল, এরাম, আটল, শামসুর রহমান শিমুয়া, বরকত আলী, আক্কেল আলী, আজমল হোসেন, মোক্তার হোসেন, মোকলেছুর রহমান রবি, হাকিমুদ্দিন টেনু।
আসামীরা ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে। ৫২ আসামীর মধ্যে ৬ জন মারা গেছেন। আদালত সূত্র জানিয়েছে, সোমবার থেকে যুক্তিতর্ক শুরু হবে, যুক্তিতর্ক শেষ হলে চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবি ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তা ও অ্যাডভোকেট সালমা আহমেদ শিলু। আসামী পক্ষে আইনজীবি ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম গ্যাদা। পাবনা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তোতা বলেন, ‘এটা একটা রাজনৈতিক মামলা। আমরা আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মোকাবেলা করবো।’
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ বাবু বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ওপরে চালানো হামলায় দায়ের করা মামলায় আসামীদের জামিন নামঞ্জুর করায় আমরা সন্তুষ্ট। আমরা আশা করি সাক্ষীদের স্বাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে বিজ্ঞ বিচারক ন্যায় বিচারের রায় দেবেন।’
এমএস/
আরও পড়ুন