বাউফলে লঞ্চে কেবিন বাণিজ্যের অভিযোগ
প্রকাশিত : ২৩:৩৯, ১৭ আগস্ট ২০১৯ | আপডেট: ২৩:৪৭, ১৭ আগস্ট ২০১৯
প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করেও শনিবার ডবল ডেকার লঞ্চে কর্মস্থলমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল পটুয়াখালীর বাউফলের বিভিন্ন ঘাটে। আপনজনের সঙ্গে ঈদ শেষে সড়ক পথের নানা বিরম্ভনা আর যানজটের মতো কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই কর্মস্থল ফিরতি মানুষের ভিড় দেখা যায় বাউফল থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলোতে। আছে ঈদ স্পেশাল সার্ভিস। তবুও ডাবল-ডেকারে কেবিনের টিকেট না পাওয়ার অভিযোগ ছিল নিমদী, নুরাইনপুর, ধুলিয়া, কালাইয়া ও বগা ঘাটের যাত্রীদের।
অনেক যাত্রি জানান ছিট বিড়ম্বনার কথাও। এক শ্রেণির অসাধু লঞ্চ কর্মচারী, ঘাটের সুপারভাইজার ও প্রভাবশালীদের যোগসাজসে বেশি মূল্যে কেবিনের টিকেট বিক্রি আর ছিট বানিজ্যেও মতো বিড়ম্বনার কথা জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাউফলের নিমদী ঘাটের এক ডবল ডেকার লঞ্চের সুপার ভাইজার জানান, কালাইয়া লঞ্চঘাট থেকে আজ শনিবার পারাবাত-১৪ ও ঈগল- ৪ ডবল ডেকার লঞ্চ দুটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। নিমদী ঘাট থেকে আছে স্পেশাল সার্ভিস ডবল ডেকার লঞ্চ রয়েল ক্রুজ। এ ছাড়া একই দিন পটুয়াখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ৪টি, গলাচিপা থেকে আসা ২টি লঞ্চ বগা ঘাটে ও ভোলা সদর, ভোলার লালমোহন, গঙ্গাপুরসহ কয়েক স্থান থেকে এসে ৬টি লঞ্চ বাউফলের ধুলিয়াঘাট হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৮টা নাগাদ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ঈদ শেষে রিটার্ন টিকেট পাবেন কি না এই আশঙ্কায় যাত্রিরা অনেকেই বাড়ি আসার পথে বাড়তি টাকার বিনিময়ে লঞ্চের ইন্সপেক্টর, কেবিনবয় কিংবা ঘাট সুপারভাইজারদের মাধ্যমে রিটার্ণ টিকেট করে রেখেছেন। কোন কোন লঞ্চের অসাধু স্টাফরা ডেকে বিছানার চাদর, মাদুর, কাঁথা বিছিয়ে ও রশি টানিয়ে সিট দখল করে যাত্রিদের থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। গতকাল শুক্রবারে ঈদের ছুটি শেষ হলেও আজ শনিবার বৃষ্টি আর মেঘলা আবহাওয়া উপেক্ষা করেও উপচে পড়া ভিড় দেখা যায় লঞ্চগুলোতে।
প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি আসার সময় লঞ্চে বসেই কেবিণের রিটার্ণ টিকেট কনফার্ম করেছেন ঢাকার গাজীপুরে চাকুরীরত মমিনপুর গ্রামের প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য সময়ে ডাবল কেবিন ২ হাজার ২শ’, সিঙ্গেল ১ হাজার ১শ’ এবং ভিআইপি ২ হাজার ৫শ’টাকা নির্ধারিত থাকলেও বর্তমানে ডবল ৪ হাজার, সিঙ্গেল ২ হাজার ২শ’ এবং ভিআইপি ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা রাখছেন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।
অতিরিক্ত টাকা দিয়েও অসাধু স্টাফদের কারসাজিতে কেবিনে সিট মিলছে না। সিট বানিজ্যের কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় ডেক যাত্রিদেরও ভোগান্তি কম নয়। ডেকেও আগের চেয়ে ভাড়া বেশি রাখা হচ্ছে। বাড়তি টাকা নিয়ে ডেকে মাদুর ও কাপড় বিছিয়ে সিট বিক্রি করছেন লঞ্চের কর্মচারিরা। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাও জড়িত রয়েছেন লঞ্চের এই ক্যাবিন ও ছিট বানিজ্যের সঙ্গে। ’
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে পারাবাত-১৪ ডবল ডেকার লঞ্চের ইন্সপেক্টর আব্দুল কাদের মিয়া বলেন,‘লঞ্চে আগের ভাড়াই রাখা হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া কিংবা কেবিন বানিজ্যের বিষয়টি সঠিক নয়। লঞ্চে যাত্রি সুবিধার কথা চিন্তা করে ডেকের সিট বিক্রি করা হয় না।’
এনএম
আরও পড়ুন