ঝালকাঠিতে অর্থ-আত্মসাত ধামাচাপা দিতে প্রধান শিক্ষকের নাটক!
প্রকাশিত : ১৭:৩৬, ২১ আগস্ট ২০১৯
ঝালকাঠি নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের কাঠিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অর্থ আত্বসাত ধামাচাপা দিতে প্রধান শিক্ষক তার উপর হামলার নাটক সাজিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সরেজমিন স্কুলে গিয়ে কথা হয়, স্কুলের শিক্ষকা, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সাথে। তারা সকলেই হামলার ঘটনাটিতে সাজানো নাটক বলে জানিয়েছে।
স্কুলের শিক্ষিকা শাম্মি আকতার ও নাসনির আকতার বলেন, গত ১৮ আগষ্ট প্রধান শিক্ষকের উপর কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি। এ সময় উপস্থিত অভিভাবক রুবী বেগম, রুমা বেগম ও সুলতানা
ইয়াসমিন বলেন, সেই দিন স্কুলে আমরা বাচ্চাদের নিতে এসেছি, কিন্তু হামলার কোন ঘটনা দেখিনি। তারা জানান, এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা প্রধান শিক্ষক মোতলেব শাহ ফকিরের কাছে স্কুলের তহবিলের হিসাব চাইলে তিনি সেখান থেকে চলে যেতে চান। এ সময় স্থানীয়রা তাকে বসাতে চাইলে তিনি ধস্তাধস্তি করে স্কুল ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। পরে তিনি নলছিটি গিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রে ভর্তি হয়ে হামলার অভিযোগ করেন, যা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট।
২০১৭ সালে উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকার উপাধি পাওয়া শাম্মি আকতার বলেন, স্কুলের উন্নয়নের জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে মোট ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা থাকলেও তিনি কাজ করেছেন ৫০ হাজার টাকার। বাকী টাকা তিনি আত্বসাত করেছেন। এই ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার মধ্যে এবারে বরাদ্দ এসেছে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা এবং পূর্বের প্রধান শিক্ষক স্কুলের তহবিলে রেখে গেছেন ৪৩ হাজার টাকা।এই টাকার হিসেব চাইতে গেলেই বিপত্তি বাধে।
উপস্থিত অভিভাবক ও ছাত্রীরাও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জানান। অভিভাবক নূরুন নাহার জানান, তার মেয়ের উপবৃত্তির টাকা প্রধান শিক্ষক দেননি। উপস্থিত ছাত্রী তহমিনা ও মারিয়া জানায় তারাও কখনও উপবৃত্তির টাকা পায়নি। অভিভাবক নূরজাহান বেগম জানান, প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতির কারনে স্কূলটি ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে সেদিনের হামলার ঘটনা সম্পর্কে ক্লাশে গিয়ে জানতে চাওয়া হয় শিক্ষার্থীদের কাছে। ৫ ম শ্রেনির ছাত্রী খাদিজা, মীম ও সাবিনা এবং চতুর্থ শ্রেনির হাবসা, আবদুর রহমান ও আবুবকর জানায়, ১৮ আগষ্ট আমরা স্কুলে ছিলাম। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি। এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী মুরাদ খলিফা ও রায়হান উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষক মোতালেব শাহ ফকির হামলার মিথ্যা নাটক সাজিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষকের উপর সেদিন কোন হামলার ঘটনাই ঘটেনি উল্লেখ করে প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানায়, প্রধান শিক্ষকের আগে থেকেই দাতে ব্যাথা ছিলো এবং গাল ফুলা ছিলো। তিনি এখন সেই ব্যাথাকে হামলা বলে চালাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মোতলেব শাহ ফকির বলেন, হামলার ঘটনা সত্যি। স্কুল তহবিল থেকে ৮৫ হাজার টাকা কাজ করা হয়েছে ও বাকী টাকা ব্যাংকে আছে। উপবৃত্তি প্রসঙ্গে বলেন, অন্য স্কুল থেকে অনেকে উপবৃত্তি নেয়ায় আমরা তাদের উপবৃত্তি দেইনি।
এদিকে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যে প্রতিবাদ করে সহকারী শিক্ষিকা শাম্মি আকতার বলেন, কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান করলে প্রামান হবেযে ব্যাংকে কোন টাকা নেই। সব প্রধান শিক্ষক আত্বসাত করেছেন।
আরকে/
আরও পড়ুন