ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

যে প্রক্রিয়ায় জেল থেকে বের হবেন মিন্নি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:২৯, ২৯ আগস্ট ২০১৯

বরগুনায় প্রকাশ্য দিবালোকে শাহ নেওয়াজ শরীফ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যাকাণ্ডের মামলায় গ্রেফতার তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। জামিনে মুক্তির আদেশ হলেও এখনই তিনি কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না। এ জন্য তাকে আরও কিছু আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মিন্নিকে জামিনে মুক্তির আদেশ দেন।

জানা যায়, জামিন বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল না করলে ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বরগুনা কারাগার থেকে মিন্নি বের হতে পারবেন বলে আশা করছেন তার আইনজীবীরা। 

এ বিষয়ে মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘যদি সরকার আপিল না করে, তাহলে হাইকোর্টের আদেশ বরগুনার আদালতে পৌঁছানোর পর মিন্নি মুক্তি পাবেন। তাই আগামী সোমবারের (২ সেপ্টেম্বর) মধ্যে তার মুক্তি মিলবে বলে ধারণা করছি।’

মিন্নির বরগুনার আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম জানিয়েছেন, হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশের স্বাক্ষরিত একটি কপি ডাকযোগে বরগুনার আদালতে পাঠানোর পর আদালতে জামানতনামা দাখিলের আবেদন করা হবে। বিচারক জামানতনামা গ্রহণ করে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে রিলিজ অর্ডার পাঠানোর আদেশ দেবেন। রিলিজ অর্ডার পাওয়া মাত্রই মিন্নিকে মুক্তি দিতে বাধ্য থাকবে কারা কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের ভিডিও গণমাধ্যমে প্রচার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃস্টি হয়। এরপর ২৭ জুন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা সদর থানায় ১২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে সন্দেহভাজন আরও চার পাঁচজন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়। 

গত ২ জুলাই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড (২৫) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এদিকে ১৬ জুলাই সকালে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদ ও বক্তব্য রেকর্ড করতে মিন্নিকে বরগুনা পুলিশলাইন্সে নিয়ে আসা হয়। দীর্ঘ ১০ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ।

পরদিন ১৭ জুলাই মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হলে তার কোন আইনজীবী সে দিন আদালতে ছিলেন না। এ দিন পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। হত্যাকাণ্ডে নিজের জড়িত থাকার কথা মিন্নি স্বীকার করেছেন বলে রিমান্ডে নেওয়ার এক দিন পর জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন। 

অন্যদিকে ২২ জুলাই মিন্নির চিকিৎসার আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করেন বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। জেল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে বিচারক তখন উল্লেখ করেন।

এ দিকে মিন্নিকে নিপীড়নের মাধ্যমে জোর করে জবানবন্দি নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। তিনি হত্যা মামলার তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন।

গত ৮ আগস্ট মিন্নিকে সরাসরি জামিন না দিয়ে এ বিষয়ে রুল জারি করতে চাইলে জামিনের আবেদন ফেরত নিয়েছিলেন মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না। এরপর গত ১৮ আগস্ট হাইকোর্টের নতুন আরেকটি বেঞ্চে জামিন আবেদন করেন মিন্নির আইনজীবীরা। ওই আবেদনের শুনানির সময় রিফাত হত্যা মামলায় মিন্নিকে কবে ও কখন গ্রেফতার করা হয়েছে, আদালতে নিয়ে তার জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পুলিশ সুপার কবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, সেসব তথ্য জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

এমএস/এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি