ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক পথে অবিচল থাকলে পথ হারাবে না বাংলাদেশ’  

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:২৪, ৩১ আগস্ট ২০১৯ | আপডেট: ২৩:৩৯, ৩১ আগস্ট ২০১৯

শিক্ষা উপমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন,‘নীতি নৈতিকতা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক পথে অবিচল থাকলে পথ হারাবে না বাংলাদেশ। তার কারণ তিনি ছিলেন একজন অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক গুনাবলী সম্পন্ন মানুষ। তার সেই গুনাবলী দিয়ে তিনি বাংলার সকল মানুষের মন জয় করেছিলেন। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী-সম্প্রদায় নির্বিশেষে প্রত্যেক বাঙ্গালীর জন্যই ছিল তাঁর অকৃত্রিম দরদবোধ।

শনিবার (৩১ আগষ্ট) সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন বি-২০২ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল কর্তৃক আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের ১৪ বছর কারাভোগ করেছেন শুধুমাত্র বাংলার শোষিত বঞ্চিত মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটানোর জন্য। তাঁর এই ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। স্বাধীনতা পরবর্তী এই স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তোলবার জন্য ১ বছরের মাথায় একটি বিশ্বের অন্যতম সেরা সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, তাঁরই আলোকে বাংলাদেশকে তিনি “স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ” গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট কিছু বিপথগামী সেনা অফিসার প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠি, দেশী বিদেশী চক্র ও সাম্রাজ্যবাদী চক্র মিলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে জাতির সেই স্বপ্ন হারিয়ে যায়। সেদিন তাদের উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা নয় পুরো রাষ্ট্রকে হত্যা করা। কিন্তু তাদের সে স্বপ্ন পুরন হয়নি। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা বিশ্বনেত্রী দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথে জাতি এগিয়ে যাচ্ছে। তাঁর প্রমান বিশ্ব আসরে বাংলাদেশ আজ মযার্দার আসনে অধিষ্ঠিত, বাংলাদেশের অগ্রগতি সারা দুনিয়ায় প্রশংসিত হচ্ছে। তাই নতুন প্রজন্মের কাছে আহবান ৭৫ এর ১৫ আগষ্টের পর থেকেই শোককে শক্তিতে পরিণত করার যে প্রক্রিয়া চলছে আমাদের বিশ্বাস সেই শক্তিতেই আমরা একদিন বিশ্ব মঞ্চে বাঙ্গালী জাতি হিসাবে শির উচু করে দাঁড়াতে পারবো তাঁর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আমাদের ভেতরে অবিনাশী শক্তি যোগাবেন, প্রেরনা জোগাবেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান।

সংগঠনের সভাপতি মং হলা চিং এর সভাপতিত্বে এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক ও সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন বি-২০২ এর সভাপতি মো. সৈয়দুল আলম ও সহ মহিলা সম্পাদক আরিফা আফরিনের সঞ্চালনা করেন। সোনালী ব্যাংক ভবন আগ্রাবাদে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ.সালাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কথা বলতে গিয়ে অনিবার্যভাবে এসে যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম। তিনি দেশের স্বার্থ ও জনগনের স্বার্থের জন্য নিজের স্বার্থকে জলাঞ্জলী দিয়েছিলেন। এই কারণে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। শোষক ও স্বেচ্ছাচারী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে বঙ্গবন্ধু পালন করেছেন ঐতিহাসিক ভূমিকা। তিনি স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর জনগনকে সঙ্গে নিয়ে সেই স্বপ্ন তিনি বাস্তবায়ন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, বাঙ্গালীর মুক্তির সংগ্রামে তিনি নিজের জীবনকে তুচ্ছ করেছিলেন। সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে তিনি কখনো সরে যাননি। তাই তিনি হয়ে উঠেন স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক। প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠি ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশ আবার জিয়ার হাতধরে মিনি পাকিস্তানের দিকে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে দীর্ঘ ২১ বছর স্বৈরাচার ও জামায়াত বিএনপি দেশকে প্রতিক্রীয়াশীল ধারায় নিয়ে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিলো ষড়যন্ত্রকারীরা। কিন্তু তারা সফল হয়নি। তারা বুঝতে পারেনি জীবিত মুজিবের চাইতে মৃত মুজিব অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে প্রতিটি বাঙ্গালীর হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। মৃত্যুঞ্জয়ী মহাপুরুষ বঙ্গবন্ধু। তাই আসুন বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগের কথা নিজেদের মধ্যে ধারন করে দেশকে সমৃদ্ধ করতে দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়ন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করি।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড চট্টগ্রাম অঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার মো. মঈনুদ্দীন, জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শফর আলী, সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন বি-২০২ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম লুৎফর রহমান, জাতীয় শ্রমিক লীগ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি  মো. বখতিয়ার উদ্দীন খান ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহবুবুল হক চৌধুরী (এটলি) সোনালী ব্যাংক লিমিটেড চট্টগ্রাম-দক্ষিনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো.আমিনুর রসুল।

আরও বক্তব্য রাখেন,বঙ্গবন্ধু পরিষদ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের নেতা - এ এস এম এয়াকুব, মো. গিয়াস উদ্দিন, এ বি এম খালেদুজ্জামান, মো. আরমান মাহমুদ, মো. মোবারক শাহ চৌধুরী, মো. আবদুল মোমেন জসীম।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন থেকে তেলোয়াত করেন মো.আবদুল ওদুদ সিকদার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জিএমও চট্টগ্রাম। সকল শহীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন। এর আগে সকালে খতমে কোরআন ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ছিল কাঙ্গালী ভোজ।

কেআই/আরকে

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি