‘মিন্নিকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে মানুষ’
প্রকাশিত : ১২:০৮, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১২:২৮, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
ঢাকা থেকে বরগুনায় ফিরেছেন বহুল আলোচিত রিফাত হত্যা মামলার আসামি ও নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। উচ্চ আদালতের আইনজীবী ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে কয়েকদিন আগে রাজধানীতে এসেছিলেন তিনি। রোববার সদরঘাট থেকে লঞ্চ যোগে রওনা হয়ে সোমবার সকালে বরগুনায় পৌঁছেছেন মিন্নি। এ সময় তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন সঙ্গে ছিলেন।
মোজাম্মেল সাংবাদিকদের জানান, আইনজীবীদের পরমর্শে মিন্নিকে নিয়ে হবিগঞ্জে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক মানুষের সঙ্গে কথা হয়েছে। সবাই মিন্নিকে ধরে কেঁদেছেন। যেখানেই তারা গিয়েছেন সেখানেই মানুষের আন্তরিকতা পেয়েছেন বলে জানান মোজাম্মেল।
রিফাত হত্যা মামলায় মিন্নিকে কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় পরিকল্পিতভাবে আসামি করা হয়েছে দাবি করে তার বাবা বলেন, ‘আইনজীবীরা সর্বোচ্চ আইনি লড়াই করে মিন্নিকে নির্দোষ প্রমাণ করবেন।’
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এ হত্যাকাণ্ডের ভিডিও গণমাধ্যমে প্রচার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এরপর ২৭ জুন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা সদর থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে সন্দেহভাজন আরও চার পাঁচজন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়।
এরপর গত ২ জুলাই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড (২৫) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে ১৬ জুলাই সকালে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদ ও বক্তব্য রেকর্ড করতে মিন্নিকে বরগুনা পুলিশলাইন্সে নিয়ে আসা হয়। দীর্ঘ ১০ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার কিরে পুলিশ।
পরদিন ১৭ জুলাই মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হলে তার কোন আইনজীবী সে দিন আদালতে ছিলেন না। এ দিন পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। হত্যাকাণ্ডে নিজের জড়িত থাকার কথা মিন্নি স্বীকার করেছেন বলে রিমান্ডে নেয়ার একদিন পর জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন।
অন্যদিকে ২২ জুলাই মিন্নির চিকিৎসার আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করেন বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। জেল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে বিচারক তখন উল্লেখ করেন।
এ দিকে মিন্নিকে নিপীড়নের মাধ্যমে জোর করে জবানবন্দি নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। তিনি হত্যা মামলার তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) স্থানান্তরের দাবি জানান।
এরপর গত ২৯ আগস্ট দুই শর্তে মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। গত ৩ সেপ্টেম্বর মিন্নি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান।
এমএস/এনএস
আরও পড়ুন