ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

বেনাপোল-শার্শায় অবাধে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে প্রাণহানির শঙ্কা

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি:

প্রকাশিত : ১৭:০৯, ৫ অক্টোবর ২০১৯

বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়াই নীতিমালা লংঘন করে শুধুমাত্র  ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে যশোরের বেনাপোল ও শার্শার ছোট বড় বাজারের মুদি দোকান, হার্ডওয়্যার দোকান, ফাস্টফুড, কসমেটিকস দোকান, ফ্ল্যাক্সিলোডের দোকান, ফটোকপির দোকান, ফার্মেসি ও থান কাপড় বিক্রির দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। জনবহুল কিংবা আবাসিক এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এই এলপি গ্যাস সিলিন্ডারগুলো দোকানের সামনে বা ভেতরে খোলামেলা অবস্থায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হচ্ছে। ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বিস্ফোরণ ও প্রাণহানির ঘটনা। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় সবাই এ ব্যবসায় নেমে পড়েছে।

বিস্ফোরক অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, ১০টির বেশি এলপি গ্যাসপূর্ণ গ্যাসাধার রাখলে যে কোনো ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ নিতে হবে। সনদ ছাড়া ব্যবসা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দেশের অনেকেই তা মানছে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বেনাপোল ও শার্শাসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ ছাড়াই স্থানভেদে ৩০ থেকে শুরু করে শতাধিক এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দোকানে মজুদ করেছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা, খুচরা এলপি গ্যাস বিক্রেতারা সংশ্লিষ্ট আইন না মেনেই ব্যবসাটি চালিয়ে যাচ্ছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এ জ্বালানির যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থাও তারা রাখছেন না। আবার বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ সংগ্রহেরও তোয়াক্কা করছেন না। 

এলপি গ্যাস প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর ডিলাররা বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ নিলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা সিলিন্ডার মজুদে আইন অনুসরণ না করে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রানহানীর রমরমা ব্যবসা। ব্যবসা পরিচালনায় কয়েকজন সাধারণ ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করলেও অধিকাংশ দোকানে নেই কোন ট্রেড লাইসেন্স। দশটির বেশি সিলিন্ডারে আবশ্যকীয় সনদ তাদের নেই। ফায়ার সার্ভিসের অগ্নি নির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার রাখার নিয়ম থাকলেও দোকান মালিকরা তা রাখছেন না। অথচ নিয়ম অনুযায়ী এলপি গ্যাস ব্যবহার, বিপণন ও বাজারজাত করতে হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ীকে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার বাধ্যতামূলক সংরক্ষণ করার কথা।

খুচরা এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বেশির ভাগই আইনগত বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে অবগত নয়। তার পরও তদারকির অভাবে ঝূঁকি জেনেও তারা সনদ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।

পরিবেশবিদদের মতে, যত্রতত্র অবাধে পেট্রোল ও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ফলে যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটে প্রানহানীর আশংকা রয়েছে। তাই লাইসেন্সবিহীন সিলিন্ডার বিক্রি ঠেকাতে প্রশাসনকে কঠোর নজরদারি ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

বেনাপোল ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন মাষ্টার তৌহিদুর রহমান বলেন, একটি গ্যাস সিলিন্ডারই একটি বোমা। অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপন আইন ২০০৩ এর ৪ ধারা মোতাবেক সরকার ঘোষিত ফায়ার সার্ভিসের কোন জ্বালানি নিয়ে কেই ব্যবসা করলে (মজুদ প্রসেসিং প্রক্রিয়াকরণ এ্যাক্ট:) তাকে উক্ত বিধান অনুযায়ী ফায়ার লাইসেন্স গ্রহন করা বাধ্যতামূলক। অন্যথায় উক্ত আইনের ১৭ ও ১৮ ধারা মোতাবেক তিন বছরের কারাদন্ড অর্থদন্ড এবং উক্ত দোকান বা স্থানের মালামাল বাজেয়াপ্ত করতে পারবে।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি