ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আবরারের দাফন সম্পন্ন, কুষ্টিয়ায় শোকে মাতম (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০০, ৮ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ১২:৫০, ৮ অক্টোবর ২০১৯

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মৃত্যুর ঘটনায় কুষ্টিয়ায় তার নিজ বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মেধাবী ছেলেকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা রোকেয়া খাতুন। শহরের পিটিআই রোডে আবরারের বাসাজুড়ে ছিল স্বজনদের আহাজারি।

মঙ্গলবার ভোরে অ্যাম্বুলেন্সে যোগে আবরার ফাহাদের মরদেহ তাঁর নিজে গ্রামে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কের বাড়িতে  তা পৌঁছায়। সেখানে সকাল সাড়ে ছয়টায় আবরারের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তৃতীয় জানাজা শেষে দাফন করা হয়।

মেধাবী সন্তানের লাশ দেখার পর থেকেই বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা রোকেয়া খাতুন। চলছে আবরারের বাসাজুড়ে ছিল স্বজনদের আহাজারি। আকস্মিক এই হৃদয়বিদারক ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের স্বজনরা। কাল দিনই একই পরিবেশ বিরাজ করছিল। সকাল থেকে মায়ের চিকৎকার ও আর্তনাদ সবাই ফাহাদের মাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন।

কিছুক্ষণ পরপর ছেলেকে নিয়ে বিলাপ করে কাঁদছেন, আবার মাঝে মাঝে মূর্ছা যাচ্ছেন। জানা গেছে, আবরারের গ্রামের বাড়ি কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে। দুই ভাইয়ের মধ্যে আবরার বড়।

আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, আমার ছেলে অত্যন্ত মেধাবী। সে স্কুল ও কলেজে সবসময় প্রথমস্থান লাভ করেছে। সে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। সবসময় লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকত। মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার এবং মানুষের উপকারে আবরার সবসময় ছিল আগে।

তার স্বপ্ন ছিল- সে বুয়েট থেকে পাস করে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাবে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার আবরারকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে, আল্লাহ তাদের বিচার করবেন। যারা আমার কোল খালি করল, তাদের কোল আল্লাহ খালি করবে। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন এবং দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

পিটিআই এলাকার বাসিন্দারা জানান, আবরারের পরিবারের সবাই খুবই ভালো। কুষ্টিয়ায় এলে স্থানীয় মসজিদে নামাজ আদায় করত আবরার। সপ্তাহখানেক আগে ছুটিতে বাড়িতে বেড়াতে আসেন আবরার ফাহাদ।তবে বাড়িতে এসে পড়ালেখা ঠিকমতো না হওয়ায় আগেভাগেই ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে। রোববার সকালে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় আবরার। সকালে মা ঘুম থেকে ডেকে তুলে দেন।

স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে,দুপুর নাগাদ আবরারের দাফন করা হয়েছে তাঁদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টির কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গায়। দাফনের আগে সেখানে তাঁর তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।। আবরারের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, ঢাকায় বুয়েট প্রাঙ্গণে গতকাল রাত দশটার দিকে। এরপর তাঁর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স কুষ্টিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে।

উল্লেখ্য, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার জের ধরে আবরার ফাহাদকে রবিবার (৬ অক্টোবর) রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দুইতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি বলেন,‘ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

এই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে রাজধানীর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯ জন ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

টিআর/

  


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি