মদ্যপ যুবলীগ নেতার কাণ্ড, পা ভাঙলো শ্রমিকের
প্রকাশিত : ১৯:৩৯, ১৮ অক্টোবর ২০১৯
হাসপাতালে মায়ের পাশে আহত শ্রমিক রবিন এবং সহযোগির সঙ্গে রাজন ভুইয়া।
রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠ শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় রবিন (৩৩) নামের এক শ্রমিককে পিটিয়ে তার বাম পা ভেঙ্গে দিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে ইয়ারপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা রাজন ভুঁইয়া ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এ ঘটনায় টানা দশ দিন চিকিৎসা শেষে শুক্রবার দুপুরে আশুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আহত রবিন।
এর আগে গত (৮ অক্টোবর) মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নরসিংহপুর এলাকার হামীম গ্রুপের পাশে মোল্লা মার্কেট এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে।
আহত শ্রমিক রবিন জানান, তিনি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থেকে স্থানীয় পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তবে গত দুই মাস আগে শারীরিক অসুস্থ্যতার কারণে চাকরি ছেড়ে দেন। এরপরে গত কয়েক দিন যাবৎ পুনঃরায় চাকরির খোঁজ করছিলেন তিনি।
এক পর্যায়ে চাকরি খোঁজার জন্য মঙ্গলবার রাতে হামীম গ্রুপের এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে ওই এলাকায় তার এক সহকর্মীর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন রবিন। এসময় স্থানীয় একটি সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে কথিত যুবলীগ নেতা রাজন ভুইয়া, রাসেল কমাণ্ডার, মাসুদ ওরফে পালসার মাসুদসহ আরও বেশ কয়েকজন মদ খেয়ে মাতলামো করছিলেন। হঠাৎ করেই রাজন ভুইয়া ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী শ্রমিক রবিনকে ডেকে নিয়ে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে রবিন মারধরের প্রতিবাদ করলে কথিত যুবলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী তাকে পিটিয়ে তার বাম পা ভেঙ্গে দেয়।
পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই শ্রমিককে টাঙ্গাইলের একটি গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে জামগড়া এলাকায় ছেড়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশও দেয় রাজন বাহিনী।
এদিকে টানা দশ দিন টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে শুক্রবার আশুলিয়া থানায় ওই ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শ্রমিক রবিন।
স্থানীয়রা জানান, রাজন ভুইয়া এলাকায় অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া কোটি টাকার মালিকও তিনি। অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের সঙ্গে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এছাড়াও কথিত ওই যুবলীগ নেতা প্রায় রাতে মদ খেয়ে সড়কের উপর দাড়িয়ে মাতলামো করেন বলেও তারা অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে কথিত যুবলীগ নেতা রাজন ভুইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি এলাকার ছেলে, যাকে পিটিয়েছি সে গাজা সেবী।
এলাকার ছেলে হিসাবে গাজা সেবীকে পুলিশে না দিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যুবলীগ করি, আমাকে আইন শেখানোর দরকার নেই। এটা বলেই মুঠোফোনের সংযোগটি কেটে দেন রাজন। এছাড়াও তিনি নিজেকে আগামী দিনের ইয়ারপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেও দাবি করেন।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) জাবেদ মাসুদ বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এনএস/
আরও পড়ুন