ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪

বেনাপোল কাস্টমসে ১৩ পদে ৬৪ হাজার প্রার্থীর আবেদন

জামাল হোসেন, বেনাপোল থেকে

প্রকাশিত : ২২:৩০, ৬ নভেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ২২:৩৪, ৬ নভেম্বর ২০১৯

সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তিন বছর পর নিয়োগ সম্পন্ন করতে চলেছে বেনাপোল কাস্টমস হাউজ কর্তৃপক্ষ। ১৩টি শূন্য পদে লোক নেওয়া হবে ৯৪ জন। আবেদন জমা পড়েছে ৬৪ হাজার চাকরি প্রার্থীর। 

প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে আছে প্রায় ৫২ হাজার প্রার্থী। এসব প্রার্থীরা হতাশায় দিন পার করেছে। অনেকের আবার চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে। অবশেষে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার কার্ড ছাড়া শুরু করেছে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। এতে খুশি চাকরি প্রার্থীরা। যশোরের বিভিন্ন কলেজ ও স্কুলে আগামী ২৯ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আর ৬ ডিসেম্বর বেনাপোল কাস্টম হাউজে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। তারপর চুড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হবে।

কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল কাস্টমস হাউজে জনবল সংকট নিরসনে ২০১৬ সালের ২ অক্টোবর ১৩ বিভাগে ৯৪ জন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদনপত্র জমা দেয়ার সময় বেধে দেয়া হয়েছিল ওই বছরের ১৫ নভেম্বর। পদের মধ্যে ছিল কম্পিউটার অপারেটর চার জন, সাঁট-মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর দুই জন, সাঁট-লিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর দুইজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পাঁচজন, টেলিফোন অপারেটর একজন, ফটোকপি অপারেটর দুইজন, ইলেকট্রিশিয়ান একজন, গাড়ি চালক দশজন, সিপাহী ৫৬ জন, উচ্চমান সহকারী ছয়জন, ক্যাশিয়ার একজন, অফিস সহায়ক তিনজন ও নিরাপত্তা প্রহরী একজন নিয়োগের কথা বলা হয়। 

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১৩টি বিভাগে কম্পিউটার অপারেটর পদে এক হাজার ৩শ‘ ৭৮টি, সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর ১শ‘ ৯১, সাঁট লিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর ৮শ‘ ৭, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার ৫ হাজার ৩শ‘ ৩২,  টেলিফোন অপারেটর ৪৮, ফটোকপি অপারেটর ২শ‘ ১০, ইলেকট্রিশিয়ান ৭৬, গাড়ি চালক ৯শ‘ ৭, সিপাই ৩১ হাজার, উচ্চমান সহকারী ১৮ হাজার ৬শ‘ ১০, ক্যাশিয়ার ৪শ‘ ১৯, অফিস সহায়ক ২ হাজার ৩৯ এবং নিরাপত্তা প্রহরী পদে ১শ‘ ৪১টি আবেদন জমা পড়ে। 

এছাড়া পদের নাম নেই এমন আবেদনের সংখ্যা ২ হাজার ১শ‘৯৮টি। জনবলের অভাবে আবেদন যাচাই বাছাই করতে অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে যায়। পরে সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন জানালে অর্থ মন্ত্রনালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সহকারি সচিব চলতি বছরের ১৮ জুলাই এক পত্রে সরাসরি নিয়োগযোগ্য শূন্যপদে জনবল নিয়োগের ছাড়পত্রের মেয়াদ ২১ অক্টোবর-২০১৯ থেকে ২০ অক্টোবর-২০২০ এক বছর বৃদ্ধি করেন।  

ওই সূত্রটি আরো জানিয়েছে, আবেদনকারীদের পরীক্ষার প্রক্রিয়া বিলম্ব হওয়ায় সাবেক কাস্টম কমিশনার শত্তকাত হোসেন নিয়োগ কমিটিকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছিলেন। তৎকালিন দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত কমিশনার জাকির হোসেন, ডেপুটি কমিশনার শাকিলা পারভীন, ডেপুটি কমিশনার রাফিয়া সুলতানা, ডেপুটি কমিশনার সাঈদ আহম্মেদ রুবেল, সহকারি কমিশনার নূরুল বাছিরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয় বলে তথ্য মিলেছে। 

এরপর নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কমিটি একটু নড়ে চড়ে বসলেও শত্তকাত হোসেন বদলী হয়ে অন্যত্র চলে গেলে কার্যক্রম কিছুটা থমকে গেছে। বর্তমান কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী যোগদান করার পর শুরু হয় আবেদন যাচাই বাছাই। প্রতিদিন সকাল থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বাছাই কাজ শেষে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার কার্ড ইস্যু করে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ছাড়া হয়। এতো পরীক্ষার্থীর বেনাপোলে স্থান সংকুলান না হওয়ায় যোগাযোগ করা হয় যশোরের বিভিন্ন কলেজ ও বিদ্যালয়ে। পরে আসন সংখ্যা নিশ্চিত হয়েই আগামী ২৯ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কয়েকজন আবেদনকারী জানান, আবেদন করে বসে থাকা কয়েকজনের চাকরির বয়স ইতোমধ্যে চলে গেছে। কার্ড পাওয়ার খবরে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে পরীক্ষার বিষয়ে। তিন বছর পর হাতে এডমিট কার্ড পেয়ে অনেকটা খুশি তারা। এখন সময় গুনছেন পরীক্ষার দিনটি।
 
এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টম হাউজের উপ কমিশনার ও বিভাগীয় নির্বাচন কমিটির সদস্য সচিব এস এম শামীমুর রহমান জানান, নানা জটিলতায় নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে ছিল সত্য। মন্ত্রণালয়ের বারবার অনুমোদনের জন্য যোগাযোগ করতে হয়েছে। এখন সব সমস্যা, সব জটিলতা কেটে গেছে। আবেদন পত্রগুলো যাচাই বাছাই করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরীক্ষার কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের বেধে দেওয়া সময় সীমার আগেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার টার্গেট কাস্টমসের। 

কেআই/এসি


 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি