আশুলিয়ায় স্ত্রীকে ঘাড় মটকে হত্যার দায় স্বীকার
প্রকাশিত : ১৬:০৭, ২৮ নভেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৭:০৯, ২৮ নভেম্বর ২০১৯
রাজধানী ঢাকার অদূরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া স্ত্রীকে হত্যার দায়ে পলাতক স্বামী সাইফুল ইসলামকে (২৬) মুঠোফোনে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে নীলফামারী থেকে আটক করে পুলিশ। আটকের পর ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
গত সোমবার তাকে নীলফামারী থেকে আটক করা হয় বলে জানান মামলাটির তদন্তকারী পুলিশের কর্মকর্তা উপ- পরিদর্শক নুরুল হুদা ভূঁইয়া। আটক সাইফুল ইসলাম নীলফামারী জেলার সদর থানাধীন মিস্ত্রীপাড়া উত্তর শশী গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে।
আসামির বরাত দিয়ে পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পারিবারিকভাবে শিউলির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সাইফুলের। বিয়ের সময় স্ত্রী শিউলির পরিবার থেকে আড়াই লাখ টাকা যৌতুক নেয়। যৌতুকের টাকা নেয়ার পরই শিউলির সঙ্গে স্বামীর সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। সাই ফুলের পরিবারের বিরুদ্ধে তার এলাকার পূর্বের মামলা চালাতে টাকার প্রয়োজন হয়। টাকার প্রয়োজন মেটাতে শিউলিকে মেরে আবার যৌতুক নিয়ে এলাকার অন্য মেয়েকে বিয়ের করার কথা ভাবতে থাকে সাইফুল। আবার যৌতুক নিয়ে বিয়ের করার ভাবনা থেকেই শিউলিকে হত্যার পরিকল্পনা করে সাইফুল। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতেই গত ১৩ নভেম্বর বিকালে বাইপাইলে একটি দোকান থেকে আধা লিটার কেরোসিন ক্রয় করে বাসায় নিয়ে যায়। স্ত্রী শিউলিকে হত্যা করতে সুযোগ খুঁজতে থাকে সাইফুল। ১৪ নভেম্বর সকাল ৭ টার দিকে শিউলি খাটে শুয়ে ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় সাইফুল বাহির থেকে ভেতরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত শিউলির বুকের উপর বসে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে বসে থাকে। এভাবে আধা ঘণ্টা বসে থাকার পরও শিউলির মৃত্যু না হওয়ায় তারপর তার ভেঙ্গে দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘাতক সাইফুল।
তিনি আরও বলেন, হত্যার ঘটনাটি আত্মহত্যার নাটক সাজাতে পূর্বের কেনা কেরোসিন শিউলির পরিহিত ওড়না, বিছানা, মাথায় ঢেলে কাছেই একটি কয়েল জ্বালিয়ে রেখে বাসা থেকে কারখানার কাজে চলে যায় স্বামী সাইফুল। এ ঘটনায় তাকে যেন সন্দেহ না করে সেজন্য অফিসে গিয়ে শিউলির ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন দেয় সে। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে শিউলির কক্ষ থেকে ধোয়া বের হতে দেখে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে রুমে ঢুকে শিউলিকে মৃত অবস্থায় দেখেন এবং বাড়ির মালিককে বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর বাড়ির মালিক জসিমের স্ত্রী সাইফুলকে ফোনে তার স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ দিলে সে কারখানা থেকে আসে। বাসায় এসে তাকে যেন কেউ সন্দেহ না করে দ্রুত এ্যাম্বুলেন্স ডাকতে বাহিরে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। পরে বাড়ির মালিকের স্ত্রী থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ নিহতের লাশটি উদ্ধারের পরে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হলে এবং স্বামী সাইফুল পলাতক থাকায় তাকেই হত্যাকারী হিসেবে সন্দেহ করা হয়। পলাতক সাইফুলকে গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার দায় স্বীকার করে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে তার বর্ননা দেন।
গতকাল বুধবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পেশ করেছে।
একে//
আরও পড়ুন