ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

ঠাকুরগাঁও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ২৩:৩৭, ৩ ডিসেম্বর ২০১৯

চরম অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের মধ্যদিয়ে চলছে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু ও অভিভাবককে লাঞ্চিত করার অভিযোগ করেছেন রোগীর স্বজনেরা।

অভিযোগে জানা যায়, হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন পঞ্চগড় জেলার হাড়িভাষা গ্রামের মৃত নহর উদ্দীনের স্ত্রী দিলজান (৬০) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সোমবার রাত ৯টায় মারা গেছে। 

দিলজানের কন্যা ছাবিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সোমবার দুপুর ২টায় হাড়িভাষা থেকে আমার মাকে চিকিৎসার জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক হাসপাতালে এনে ভর্তি করাই। কিন্তু চিকিৎসা নিতে এসে তাদের অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এখানে চিকিৎসা তো দূরের কথা উল্টো নার্সদের লাঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলার কারণে আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের ছেলে ওলিয়ার রহমান জানান, দায়িত্বে থাকা নার্সদের সাথে কথা বলতে গিয়ে আমাকে অপমানিত হতে হয়েছে।

এমন অভিযোগ করেন জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা অপর এক রোগীর স্বজন আবুল কালাম। তিনি বলেন, গরীব মানুষ যখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। তখন তারা ভাবে আমরা তাদের দাস। জনগণের টাকা খেয়ে জীবিকা-নির্বাহ করছে। কিন্তু তারা আমাদের কিছুই মনে করে না। তাদের অবহেলার কারণে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। একই অভিযোগ করেন, শহরের নিশ্চিন্তপুর মহল্লার নাসির আহম্মেদ।
 
শহরের মুসলিম নগর এলাকার বাসিন্দা উম্মে নাজনীন অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে পেটের ব্যাথায় ২৮ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করাই। কিন্তু সুস্থ না হতেই তাকে হঠাৎ রিলিজ দেয়া হয়। পরামর্শ দেয়া হয় কিছু টেস্ট করে আউট ডোরে ওই চিকিৎসককে দেখাতে। সে অনুযায়ী টেষ্টের রিপোর্ট নিয়ে দেখালে চিকিৎসক বলেন, এ্যাপেন্ডিসাইটের ব্যাথা হয়েছে। অপারেশন করতে হবে। সে অনুযায়ী মেয়েকে পূণরায় হাসপাতালে ভর্তি করাই। 

কিন্তু চিকিৎসক পরের দিন বলেন, অপারেশন করতে হবে না। এটা গাইনি সমস্যা। চিকিৎসক যদি আগেরদিন এক রোগ আর পরেরদিন আরেক রোগের কথা বলেন তাহলে আমরা কোথায় যাব? এখানে কি চিকিৎসা হচ্ছে? না কি মানুষকে ব্যবসা অথবা মেরে ফেলা হচ্ছে?

এব্যাপারে দায়িত্বে থাকা সিনিয়র স্টাফ নার্স সালেহা বেগমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ওই সময়ে আমি ছিলাম না। তখন ছিল নার্স রুপালি আক্তার ও কুলছুম । রুপালি আক্তারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রোগির অবস্থা ভাল ছিল না । সে কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। আমাদের দিক থেকে কোন প্রকার অবহেলা ছিল না।

এ ব্যাপারে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: সালমা সুলতানা কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ওয়ার্ডে কোন রোগির মৃত্যু হলে তার দায়িত্ব জরুরি বিভাগের নয়।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক প্রভাষ কুমার দাস জানান, অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে এবং দোষী যদি কেউ হয় অবশ্যই তাঁর উপযুক্ত বিচার হবে।

কেআই/এসি
 
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি