ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

আলোচিত সেই ‘কোটিপতি পিয়ন’ গ্রেফতার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২২:০৬, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯

কোটিপতি পিয়ন ইয়াছিন

কোটিপতি পিয়ন ইয়াছিন

আলোচিত সেই ‘কোটিপতি পিয়ন’ ইয়াছিন মিয়া পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের পিয়ন ইয়াছিন মিয়ার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দেয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে নিবন্ধন অধিদফতর ঢাকার আইআরও নৃপেন্দ্রনাথ শিকদার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় অভিযোগটি দেন। 

অভিযোগে বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া টাকা ব্যাংকে জমার বদলে ভুয়া সিল-স্বাক্ষর দিয়ে পাঁচ কোটি ৭৭ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা উল্লেখ করা হয়। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠিয়েছে পুলিশ। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো. মোস্তাাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশ ইয়াছিনকে আটক করেছে বলে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুর রহমান বলেন, ইয়াছিনকে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি তদন্ত করার এখতিয়ার দুদকের। আমরা অভিযোগটি দুদকের কুমিল্লা কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে পিয়ন পদে চাকরি পান ইয়াছিন মিয়া। এর আগে মাস্টার রোলে সেখানে কাজ করতেন তিনি। ইয়াছিন জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দি ইউনিয়নের আতুয়াকান্দি এলাকার মোহন মিয়ার ছেলে ইয়াছিন মিয়া। তার পোস্টিং নাসিরনগর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে হলেও বর্তমানে ডেপুটেশনে সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আছেন। 

গত ২৬ নভেম্বর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অডিট কার্যক্রম শুরু করেন নিবন্ধন অধিদফতর, ঢাকার আইআরও নৃপেন্দ্রনাথ শিকদার। সরকারি বিভিন্ন ফি’র চালান ঠিক আছে কি-না সেটি যাচাই করতে সাব-রেজিস্ট্রারকে ব্যাংকে গিয়ে খোঁজ নিতে বলেন নৃপেন্দ্র নাথ শিকদার। পরে ইয়াছিনকে সঙ্গে নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমান সোনালী ব্যাংকে যান। কারণ ইয়াছিনকে প্রায়ই অফিসের নকল, তল্লাশি ও রেজিস্ট্রেশন ফিসহ অন্যান্য চালানের টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা করতে পাঠানো হতো। তবে ইয়াছিনকে নিয়ে ব্যাংকে যাওয়ার পর কয়েকটি চালান মিলিয়ে দেখেন এগুলোর টাকা জমা করা হয়নি। সিল ও স্বাক্ষর জাল করে এসব টাকা জমা দেখানো হয়েছে বলে জানায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি অডিট কর্মকর্তাকে জানানোর পর গা ঢাকা দেন ইয়াছিন। 

এ ঘটনায় ২৯ নভেম্বর সদর মডেল থানায় একটি জিডি করা হয়। মূলত ইয়াছিন গা ঢাকা দেয়ার পর বেরিয়ে আসে দুর্নীতি-অনিয়ম করে তার অর্থ অর্জনের বিষয়টি। জেলা শহরে তিনটি ফ্ল্যাট ও বাড়ি এবং তিনটি বিয়ে করেছেন তিনি। তবে কীভাবে পিয়ন পদে চাকরি করে এত অর্থ-সম্পদ গড়েছেন সেটি নিয়ে সবার মনে প্রশ্ন দেখা দেয়। এরই মধ্যে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ভোররাতে সদর মডেল থানা এলাকা থেকে ইয়াছিনকে আটক করে পুলিশ।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি