আশুগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা
প্রকাশিত : ১৭:৪২, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক সারোয়ার আলমের আদালতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তফা কামাল ও লোকমান হোসেন জয়েন্ট ভেঞ্চার কনস্ট্রাকশন ফার্মের ব্যবস্থাপক আতিকুর রহমান সুমন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এতে মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আইনজীবী মাহবুবুল আলম খোকন জানান, আদালত মামলাটি তদন্ত করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার গোলচত্বর থেকে আড়াইসিধা-তালশহর পর্যন্ত আট কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন কাজের সর্বনিম্ন দরপত্রদাতা হিসেবে কাজটি মেসার্স মোস্তফা কামাল ও লোকমান হোসেন জয়েন্ট ভেঞ্চার কনস্ট্রাকশন ফার্মকে দেয়া হয়। এরপর থেকেই কাজটি ইউপি চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিনের কাছে বিক্রি করে দেয়ার জন্য তিনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক লোকমান হোসেনকে হুমকি দিতে থাকেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় আরও বলা হয়, হুমকি উপেক্ষা করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। এর মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলা সদরের আলমনগর সড়ক সেতুর সামনে সালাহ উদ্দিনের নেতৃত্বে মামলায় অন্য অভিযুক্তরা গিয়ে শক্তি প্রদর্শন করে মামলার বাদী আতিকুর রহমান সুমনের কাছে, এ সময় তারা লোকমান হোসেন কোথায় জানতে চান।
সালাহ উদ্দিন বলেন, লোকমান হোসেন তাদেরকে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দেয়ার কথা। তখন আতিকুর রহমান সুমন বলেন, চাঁদার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। এ কথা বলার পর কাজ বন্ধ রাখার কথা বলে আতিকুর রহমানের উপর অভিযুক্তরা হামলা করে।
এসময় নির্মাণ কাজে থাকা রোলারের একলক্ষ টাকা মূল্যের ৫টি ব্যাটারি ও শ্রমিকের বেতনের দুই লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এই ঘটনা জেনে ৬ ডিসেম্বর এলজিইডি অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ কাজ দেখতে আসলে আসামীরা তাদেরকে ও বাদীকে হুমকি প্রদান করে। এই ঘটনায় এলজিইডি থেকেও একটি অভিযোগ আশুগঞ্জ থানায় দায়ের করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুর রশিদ জানান, আমরা আদালত থেকে এখনও কোন মামলার কাজ পায়নি। কাগজ পেলে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে প্রতিবাদ দাখিল করব।
তবে আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, চাঁদা দাবি ও হামলার অভিযোগ সঠিক নয়। তদন্ত করে দেখুক ঘটনা সত্য কি না, আমি জীবনে কারো কাছে চাঁদা চেয়েছি কিনা। রাস্তার কাজের মান ভালো রাখার জন্য জনগণের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে যদি মামলা হয় হবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। কাজের মান নিয়ে এলজিইডি বুঝবে, আমরা তাদের সাথে কথা বলব। লোকমান হোসেন কিংবা মোস্তফা কামালের সাথে আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। রাস্তার কাজ যে খারাপ হচ্ছে তার প্রমাণ আছে।
গত ৫ ডিসেম্বর আশুগঞ্জ-তালশহর সড়কের সংস্কার কাজে নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার নিয়ে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন আশুগঞ্জের তিনটি ইউপির চেয়ারম্যান।
কেআই/এসি
আরও পড়ুন