ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মৌলভীবাজারে ভারতীয় হাই কমিশনের আর্ট ক্যাম্প

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২৩:০১, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯

হিংসা বিদ্বেষ ভুলে একটি পরোপকারী পৃথিবী গড়ে তুলার লক্ষ্যে মহাত্বা গান্ধীর জীবন ও কর্মের উপর মৌলভীবাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছে একটি আর্ট ক্যাম্প। শনিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল টি রিসোর্ট এন্ড মিউজিয়ামের প্রাকৃতিভরা ক্যাম্পাসে মহাত্বা গান্ধীর সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী স্মরণে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এ আর্ট ক্যাম্প। 

আর এ আর্ট ক্যাম্পে চিত্রশিল্পীদের রংতুলি আর হাতের স্পর্শে ফুটে উঠেছে শান্তির পদযাত্রী অহিংসবাদীনেতা মাহাত্বা গান্ধীর বিভিন্ন কর্মের দূর্লভ চিত্রকর্ম। যা দেখে অভিভুত হয়েছেন দর্শনার্থী। জানালেন, ক্যাম্পের পরামর্শদাতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক রোকেয়া সুলতানা। তিনি জানান, এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ১৫ জন তরুণ শিল্পী অংশগ্রহণ করেন। 

শনিবার বিকেলে উপজেলার টি রিসোর্ট মাঠে আর্ট ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনার শ্রী বিশ্বদীপ দে। তিনি চিত্রকল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা মহাত্মা গান্ধির অবয়বগুলো ঘুরে দেখেন। পরে সাংবাদিকদের সাথে এক প্রেস বিফিং-এ মিলিত হয়ে তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গল এত নয়নাভিরাম জায়গা তাঁর কাছে মনে হচ্ছে শুধু আর্ট ক্যাম্প নয় এখানে বসে কবিতাও লিখতে মন চাইবে। মহাত্মাগান্ধিজি ভারতের জাতির পিতা কিন্তু গান্ধিজির অহিংস দর্শন বিশ্বের নিকট এখনো একটি চমৎকার উদাহরণ এবং অনুকরণীয়ও বটে। আর বাংলাদেশের কথা বলতে গেলে বলা যায়, বাংলাদেশের সাথে রয়েছে এর বিশেষ সংযোগ। মহাত্মাগান্ধী সারাজীবন শান্তির পক্ষে গান গেয়ে গেছেন। বাংলাদেশের নোয়াখালিতে রয়েছে গান্ধী আশ্রম। সেখানে প্রতিবছর মহাত্মাগান্ধিকে স্বরণ করা হয়। ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনার শ্রী বিশ্বদীপ আরো বলেন, মুজিববর্ষ পালনে আমার দেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে অনেকবার আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি যখন বঙ্গবন্ধু’র ১০০বছর সেলিব্রেট করা হবে আমরাও আপনাদের সঙ্গে একসাথে সেলিব্রেট করবো। মুজিববর্ষ উদযাপনে যেভাবে বাংলাদেশ রুপ রেখা করবে, তারমধ্যে আমার দেশ পাশে থাকবে। আমার ধারণা শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাংলাদেশের নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন সারা বিশ্বের নেতা। এই বিশ্ব নেতাকে পুরো বিশ্বের কাছে নিয়ে যেতে যা করণীয় এবং বাংলাদেশের পাশে থেকে যে সহায়তা আমাদের করা প্রয়োজন আমরা তা করবো।

এর আগে মহাত্মাগান্ধির জীবন নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনার শ্রী বিশ্বদীপ দে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ও রোকেয়া সুলতানা, সহকারী হাই কমিশনার এল কৃষ্ণ মুর্তি প্রমুখ।

প্রেস বিফিংএ  আরো উল্লেখ করা হয়, ১২ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪দিন ব্যাপী শ্রীমঙ্গলে আর্ট ক্যাম্প শুরুর আগে গত ১১ ডিসেম্বর ভারতীয় হাই কমিশনে ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রীমতি রিভা গাঙ্গুলী দাশ গান্ধী@১৫০ আর্ট ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন। ভারত সরকার ভারতবর্ষ ব্যাপী  এবং বিদেশী মিশন গুলোতে মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশততম জন্মবার্ষিকি উদযাপন করছে এবং এটি তারই একটি অংশ।  ১১ ডিসেম্বর ভারতীয় হাই কমিশনা শ্রীমতি রিভা গাঙ্গুলী দাশ ঢাকার আর্ট ক্যাম্প পরিদর্শন করে গান্ধীজীর কালজয়ী নীতিগুলো এসব তরুণ প্রাণে অনুরণিত হচ্ছে দেখে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন বলেন, নতুন প্রজন্ম একদিন তা গ্রহন করবে এবং তারা সুন্দর একটি পৃথিবী উপহার দিবে।  তিনি আর্ট ক্যাম্পে তরুণ শিল্পীদের উৎসাহী অংশগ্রহণ এবং এ শিল্পকর্মে গান্ধীজীর দর্শন নিয়ে তাদের ভাবনার সত্যিকার প্রতিফলন হয়েছে বলেও মত প্রকাশ করেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ও রোকেয়া সুলতানা তত্বাবধানে বাংলাদেশের ১৫ জন তরুণ শিল্পী এ আর্ট ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন। 

আর্ট ক্যাম্পে অংশনেয়া শিল্পী তাহিয়া হোসেন জানান, মহাত্বা গান্ধী তাঁর জীবন দিয়ে প্রমান করেছিলেন সহিংসতার আশ্রয় না নিয়ে যে কেউ তার জীবনের লক্ষ্যে পৌছাতে পারে, তিনি তার চিত্রকর্মে মহাত্বা গান্ধীর এই দিকটি তুলে ধরেছেন। আর শিল্পী রাহুল রাহাত বলেন, তিনি তার কাজের মাধ্যমে মহাত্বা গান্ধীর সত্যান্বেষণ উপস্থাপনের চেষ্ঠা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে এ আরো জানানো হয়, আগামী ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা শিল্পকলা একাডেমিতে এই ছবিগুলো প্রদর্শন করা হবে।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি