বাগেরহাটে বিএনপির আহবায়ক কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা
প্রকাশিত : ২০:১৫, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ২০:৩৬, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯
এটিএম আকরাম হোসেন তালিমকে আহবায়ক ও মোজাফফর রহমান আলমকে সদস্য সচিব করে বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট্য নবগঠিত এই কমিটির অনুমোদন দেন। এদিকে নবগঠিত আহবায়ক কমিটিকে কেন্দ্র করে বাগেরহাট বিএনপির দলীয় কোন্দল এখন প্রকাশ্য রূপ পেয়েছে। নবগঠিত এই আহবায়ক কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাগেরহাট জেলা বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বিক্ষোভ সমাবেশে নবগঠিত আহবায়ক কমিটির অনেক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
নবগঠিত এই আহবায়ক কমিটিকে অগণতান্ত্রিক ও বিএনপিকে দলীয়ভাবে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা উল্লেখ করে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যারা বিএনপি-র কোন কর্মকান্ডের সাথে ছিল না। তাদেরকে নিয়ে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি থাকলে আমরা সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হব। আমাদের মূল লক্ষ বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে পারব না।
তিনি আরও বলেন, জেলা বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের সাথে পরামর্শ না করে অগণতান্ত্রিকভাবে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ২০ বছর ধরে যারা বিএনপির রাজনীতি থেকে দূরে ছিল তাদেরকে এই কমিটিতে রাখা হয়েছে। এমনকি মৃত ব্যক্তির নামও এই কমিটিতে স্থান পেয়েছে। আমি মনে করি এই কমিটি ভবিষ্যতে বাগেরহাট জেলা বিএনপিকে দুর্বল করবে। এই কমিটি দিয়ে কোনভাবে পূর্নাঙ্গ ভাল কমিটি আশা করা যায় না। তিন দিনের মধ্যে এই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে পূনর্গঠনের দাবি জানাই।
নবগঠিত আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাফফর রহমান আলম বলেন, যে আহবায়ক কমিটি গঠন হয়েছে তার আহবায়ক ২০ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির বাইরে ছিলেন। যুগ্ন আহবায়ক যারা হয়েছেন তারা থাকেন ঢাকায়। তাদেরও দলের সাথে তেমন কোন যোগাযোগ নেই। এই কমিটি নিয়ে জেলার সাংগঠনিক কমিটি গুলোকে পূর্নাঙ্গরুপে করা সম্ভব নয়।
আহবায়ক কমিটির সদস্য মোল্লাহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি শেখ হাফিজুর রহমান ও রামপাল উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে যারা বাগেরহাটে বিএনপিকে সংগঠিত করেছে। আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। সরকারের দমন পীড়নের শিকার হয়েছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে যে আহবায়ক কমিটি করা হয়েছে আমরা তা মানিনা।
শহরের জেলা বিএনপির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য এ্যাড. অহিদুজ্জামান দিপু, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এসকেন্দার হোসেন, আহবায়ক কমিটির সদস্য সাহেদ আলী রবি, মেহেবুবুল হক কিশোর, জেলা ছাত্র দলের সভাপতি ইমরান খান সবুজসহ বিভিন্ন উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ।
নবগঠিত আহবায়ক কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, যুগ্ম আহবায়ক কামরুল ইসলাম গোরা, শমসের আলী মোহন, খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ ও ড. ফরিদুল ইসলাম। সদস্য হিসেবে রয়েছেন, এম এ সালাম, আলী রেজা বাবু, মঞ্জুর মোর্শেদ স্বপন, এ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, মনিরুল ইসলাম খান, কাজী খায়রুজ্জামান, প্রকৌশলী মাসুদ রানা, ডা: আব্দুর রহমান, মো: মনিরুল হক ফরাজি, নাসির আহমেদ মালেক, ব্যারিস্টার জাকির হোসেন, শেখ সাহেদ আলী রবি, অধ্যাপক হাদিউজ্জামান হিরো, সরদার ওয়াহিদুল ইসলাম পল্টু, আলহাজ্ব জুলফিকার আলী, শেখ আব্দুল হালিম খোকন, মেহেবুবুল হক কিশোর, বেগম রুনা গাজী, এ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, এ্যাডভোকেট ফারহানা জাহান নিপা, হাজরা আসাদুল ইসলাম পান্না, শেখ সফিকুর রহমান, শেখ হাফিজুর রহমান, মমিনুল হক টুলু বিশ্বাস, মো: শহিদুল হক, আ: মজিদ জব্বার, মোল্যা ইসহাক আলী, হাফিজুর রহমান তুহিন ও মৃধা নজরুল ইসলাম। এর মধ্যে শেখ সফিকুর রহমান কয়েকদিন আগে মৃত্যুবরণ করেছেন।
উল্লেখ, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এম এ এইচ সেলিম। তারপর থেকে বর্তমান পর্যন্ত এম এ এইচ সেলিমের ছোট ভাই এম এ সালাম জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
কেআই/আরকে/এসি
আরও পড়ুন