মৌলভীবাজারে ভারত-বাংলাদেশ মিলন মেলা
প্রকাশিত : ২২:৪৪, ৬ জানুয়ারি ২০২০
মৌলভীবাজারে ভারত-বাংলাদেশ মিলন মেলা
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাসহরে ১০ দিনব্যাপী গান্ধি মেলার সমাপনী দিনে ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ মননে ও স্মরণে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার শরীফপুর সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহরে ভারত-বাংলাদেশ সম্প্রীতি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় বাংলাদেশের শিল্পী সেলিম চৌধুরী ও আইরিন মুন্নির পরিবেশনায় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত এবং ভারতীয়দের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
কৈলাশহরের আশ্রয় সামাজিক সংস্থার উদ্যোগে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের সাবেক গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রী ও আশ্রয় সামাজিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সাবেক বিধায়ক বিরজিৎ সিনহার সভাপতিত্বে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোচনা সভায় অংশ নেন দুই দেশের সাংবাদিক, সাংস্কৃতিককর্মী ও সূধীজন।
এ সময় বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী অধ্যাপক রজত শুভ্র চক্রবর্তী, মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হেসেন ছমরু, উনকোটি জেলা পরিষদের সদস্য বদরুজ্জামান, সাংবাদিক দেবাশিষ দত্ত ও কৈলাশহরের সাংবাদিক সুব্রত চক্রবর্তী।
এ সময় উৎসবে ভারত-বাংলা সম্প্রতি উৎসবের বাংলাদেশ সমন্বয়ক সাংবাদিক মুজিবুর রহমান রঞ্জু ও মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রাহক বিকুল চক্রবর্তীর সমন্বয়ে বাংলাদেশের কমলগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাব, কুলাউড়া প্রেসক্লাব ও জুড়ি প্রেসক্লাবের আমন্ত্রিত সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, সংস্কৃতিকর্মী, শিক্ষক সমন্বয়ে ২৭ জনের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন।
বেলা ৩টায় বাংলাদেশের দুই সংগীত শিল্পী সেলিম চৌধুরী ও আইরিন মুন্নিসহ অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে ও লাল গোলাপ দিয়ে বরণ করে নেন ত্রিপুরা সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী বিরজিৎ সিনহা। পরে বাংলাদেশের শিল্পী সেলিম চৌধুরী ও আইরিন মুন্নীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এর পর ভারতীয় ক্ষুদে শিল্পীরা ভারতীয় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন।
এ সময় বাংলাদেশের অতিথিদের সম্মানে ভারতীয় ক্ষুদে শিল্পীরা একটি নৃত্য ও যোগ ব্যায়াম প্রদর্শণ করে। এর পর আয়োজক ভারতীয়রা বাংলাদেশের অতিথিদের ক্রেস্ট প্রদান করেন। সাথে সাথে বাংলাদেশী সাংবাদিকরা ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে ত্রিপুরার সাবেক মন্ত্রী বিরজীৎ সিনহা ও উনকোটি জেলা পরিষদের সদস্য বদরুজ্জামানসহ আয়োজকদের সম্মাননা জানান।
এছাড়া বাংলাদেশী সাংবাদিকরা ভারতীয়দের মাঝে দেশ থেকে নেয়া মিষ্টি বিতরণ করেন। এ সময় উৎসবস্থল ভারত ও বাংলাদেশের শিল্পী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকদের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়।
আয়োজক আশ্রয় সামাজিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ত্রিপুরার সাবেক মন্ত্রী বিরজীৎ সিনহা স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ১৯৪৭ সালের আগে আমরা একই দেশের নাগরিক ছিলাম। এরপর পাকিস্তান ভারত ভাগ হয়ে যায়। তারপর ১৯৭১ সালে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। সে সময় ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল। এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, সামাজিকতা, ক্রীড়া সবই এক।
তবে দুই দেশ হওয়ায় মাঝখানে কাটা তারের বেড়া। তবে আমাদের সম্প্রীতি অঠুট আছে। আগামীতে আরও বড় আকারে সম্প্রীতি মেলার আয়োজন করা হবে আর তখন আরও বাংলাদেশী অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।
বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্যে সাংবাদিক রজত শুভ্র চক্রবর্তী ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন ছমরু বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশকে যে সাহায্য করেছেন তা বাংলাদেশ কোনওদিন ভুলবেনা। এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রিয় প্রতিবেশী দেশ। উভয়ের মধ্যে এ সম্প্রতি ও ভাতৃত্ববন্ধন অটুট থাকবে।
এনএস/
আরও পড়ুন